পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: গুরুতর অসুস্থ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। গতকাল শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন বুদ্ধদেবের পারিবারিক চিকিৎসকেরা। সেই মতো তাঁকে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আপাতত সেইখানেই চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। গতকালই চিকিৎসকেরা জানান, ফুসফুসের সংক্রমণ রয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর।
বিগতে কয়েকদিনে শ্বাসকষ্টের সমস্যাটা অনেকটাই বাড়ে। চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী, সৌতিক পাণ্ডার নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে নয় সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড। তবে চিকিৎসায় সাড়া দিলেও সংকটজনক অবস্থাতেই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা। রাতে ভেন্টিলেশনে দেওয়ার পর অনেকটাই ভালো আছেন বুদ্ধবাবু। এখন তাঁর শরীরে সিআরপি ৩১৮। ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে দেওয়ার পর দেহে অক্সিজেনের মাত্রা ১০০ শতাংশ। তবে এখনও আচ্ছন্ন অবস্থাতেই রয়েছেন তিনি।
তাঁর শরীরে পাওয়া গিয়েছে মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স এক ব্যাক্টেরিয়ার খোঁজ। ক্লেবশিয়েলা নামে এই মারণ ব্যাক্টেরিয়ার খোঁজ পেয়েছেন চিকিৎসকেরা। ফুসফুসের দু’দিকেই আক্রমণ করেছে নিউমোনিয়া। সে কারণেই বদলে ফেলা হয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক। এখন আগামী ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। চিকিৎসক কোশিক
কৌশিক চক্রবর্তী বলছেন, “কার্বন-ডাই-অক্সাইডের লেভেল বেড়ে যাওয়ার কারণেই আমরা ওনাকে ভেন্টিলেশনে রাখতে বাধ্য হয়েছি। অনেক কষ্ট করে শ্বাস নিতে হচ্ছিল, প্রেসারেরও ওঠানাম চলছে। সে কারণেই আমরা ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে তাতে কাজ হবে বলে আমরা আশা করছি। তবে কতটা শারীরিক উন্নতি হবে সেটা আগামী কয়েকদিনে বোঝা যাবে। ওনার শরীর অ্যান্টিবায়োটিক কতটা গ্রহণ করতে পারছে, কতটা কাজে লাগছে, নিউমোনিয়া কমছে কিনা সেটা এখনই বোঝা সম্ভব নয়।”
কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, বছর দুয়েক আগে কোভিড সংক্রমণের আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সেই সময় সিওপিডি-র জন্য কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেড়ে যাওয়ায় ওনাকে ভর্তি হতে হয়েছিল। তখন উনি এসেছিলেন প্রায় অচৈতন্য অবস্থায়। ওনাকে ভেন্টিলেট করতে বাধ্য হয়েছিলাম। তবে দেড় থেকে দুদিনের মধ্যে ভেন্টিলেশন সাপোর্টের বাইরে ওনাকে আনা যায়। কিন্তু, সেবার শুধুই কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেড়েছিল, অক্সিজেন ঘাটতি হচ্ছিল। এবার কিন্তু, ফুসফুসের নিউমোনিয়াটা খুবই মারাত্মক। সেটাই আমাদের ভাবাচ্ছে। আর বয়সের কারণে ওনার ফুসফুসের ক্ষমতাও তো অনেকটা কমে গিয়েছে।”