পারিজাত মোল্লা: বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে উলুবেড়িয়ায় নির্বাচনী নথি জালিয়াতি মামলায় তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে মহাশয়। সেই রিপোর্টে বিডিওকে সাসপেন্ড করার পরামর্শ দিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে। শুধু বিডিও নয়, এসডিও-র বিরুদ্ধেও একই পদেক্ষপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে তদন্ত করার পরামর্শও দেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, উলুবেড়িয়ার সিপিএম প্রার্থী কাশ্মীরা বেগম খানের ব্যালট পেপার ষড়যন্ত্র করে বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়। ডিভিশন বেঞ্চ, এই মামলার তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করে দেয়। সেই কমিটির মাথায় ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, -‘কমিটি তার রিপোর্ট সিঙ্গল বেঞ্চে জমা দেবে’। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে রিপোর্ট জমা পড়ে। সেখানে বলা হয়, ব্যালট বিকৃতির যে অভিযোগ উঠেছে তার মধ্যে সত্যতা রয়েছে। এই কাজে বিডিও, এসডিও একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছেন। একইসঙ্গে এই চক্রে যুক্ত রয়েছেন অনগ্রসর শ্রেণির দফতরের অফিসারও।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র কমিটি তার রিপোর্টে উল্লেখ করে, তিনজনের বিরুদ্ধেই বিভাগীয় তদন্ত করে পদক্ষেপ করতে হবে। পাশাপাশি এফআইআর করে তদন্ত করার সুপারিশও দেওয়া হয়। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র তাঁর পর্যবেক্ষণ রিপোর্টে আরও জানিয়েছেন,-‘সিপিএম প্রার্থী কাশ্মীরার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো তৃণমূল প্রার্থীর লুত্ফার বেগমের ওবিসি সার্টিফিকেটও জাল করা হয়েছিল। সেই নিয়ে এসডিওর কাছে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি কোনও পদক্ষেপ করেননি’।
এর আগেই এই উলুবেড়িয়াররই ২ নম্বর ব্লকের দুই সিপিএম প্রার্থী ফিরোজা বিবি ও ওমজা বিবি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁদের মনোনয়নপত্রে ইচ্ছাকৃত বিকৃতি ঘটানো হয়েছে। তারপর স্ক্রুটিনিতে তা বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। এমনকী বিডিওর কাছে অভিযোগ জানাতে গেলেও শোনা হয়নি। সেই নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই দুই সিপিএম প্রার্থী। বিচারপতি অমৃতা সিনহা এই মামলাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। যা পঞ্চায়েত নির্বাচনে এক নজিরবিহীন ঘটনা ছিল। যদিও পরে ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি সিনহার নির্দেশের ওপর অন্তর্বতীকালীন স্থগিতাদেশ দেয়। এদিনকার তদন্ত রিপোর্ট রাজ্য কে বেকায়দায় ফেলে দিল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।