পারিজাত মোল্লা: পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল প্রকাশ এক সপ্তাহ পার হলেও ভোট নিয়ে একের পর এক মামলা দাখিল হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টে। পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত একের পর এক মামলার পাহাড় জমেছে কলকাতা হাইকোর্টের বিভিন্ন বেঞ্চে। গত সোমবারই এই নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এবার মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিজে এ ব্যাপারে বিরক্তি প্রকাশ করলেন এজলাসে । পঞ্চায়েত মামলা শুনতে গিয়ে সাধারণ মামলা শোনা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম।এদিন তিনি বলেন, ”গত দেড় মাস ধরে গাদা গাদা পঞ্চায়েত মামলা দায়ের হচ্ছে।
পঞ্চায়েত মামলা শুনতে গিয়ে অন্য কোনও মামলা শোনা যাচ্ছে না। আর মানুষ ভাবছে আমরা কাজ করছি না।”গত ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হয়েছে রাজ্যে। তার পর থেকেই পঞ্চায়েত সংক্রান্ত একের পর এক মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। মামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী, আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকিও। এঁরা কখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী, কখনও ভোটের বুথে নিরাপত্তা, কখনও বা ভোটের দফা বৃদ্ধি, আবার কখনও প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে মামলা করেছেন। পঞ্চায়েত ভোটের অশান্ত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সেই সব মামলা দ্রুত শুনানিও করতে হয়েছে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চেই হয়েছে বহু মামলার শুনানি।
কিন্তু ভোট শেষ হলেও মামলা থামেনি। হাইকোর্টে এখন বিরোধীরা মামলা করছেন ভোটের হিংসার অভিযোগের বিচার চেয়ে। তা নিয়েই এদিন বিরক্তি প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি।মঙ্গলবার হাইকোর্টের কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পঞ্চায়েত ভোটের পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান বিচারপতি এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কয়েক জন আইনজীবী।
তাঁরা দ্রুত শুনানির আর্জি জানালেই বিরক্তি প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ”পঞ্চায়েত মামলার ভিড়েই অন্য সব মামলা চাপা পড়ে যাচ্ছে।” ঠিক যেমনটা গত সোমবার বলেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তও। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর মামলার শুনানিতে তিনি বলেছিলেন, ”সারা দিন কি শুধু রাজনৈতিক মামলাই শুনব? অন্য মামলা কি আর শোনা যাবে না!”পঞ্চায়েত সংক্রান্ত মামলার দ্রুত শুনানি প্রসঙ্গে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমও আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ”আইনজীবীদের আবেদন মতো সময়ে শুনানি করা সম্ভব নয়। ওই মামলাগুলির জন্য নির্ধারিত দিনেই পঞ্চায়েত মামলার শুনানি হবে।” সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের মামলা গুলি গুরত্ব দেওয়া হোক বলে আইনজীবীদের বড় অংশ মনে করছেন।