পারিজাত মোল্লা: ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের দায়ের করা মামলার শুনানি আবারও পিছল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে । শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি ছিল। কিন্তু এদিনও সেই মামলা স্থগিত হয়ে যায়। এরফলে সরকারি কর্মচারীদের বড় অংশ ফের দোলাচালে পড়লেন। ডিএ মামলা বারবার পিছিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এদিন রীতমতো ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনুসিংভি কে। এদিন তিনি বলেন, -‘এর আগের শুনানিতে জানানো হয়েছিল, এবার চূড়ান্ত শুনানি হবে। তা সত্ত্বেও মামলা ‘মিসলেনিয়াস ডে’-তে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এই মামলার চূড়ান্ত শুনানি হওয়া প্রয়োজন। কর্মচারীদের ডিএ দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ রাজ্যের বিষয়। তবু এই বিষয়ে যখন শীর্ষ আদালতে মামলা হয়েছে তাই দ্রুত নিস্পত্তি হওয়া জরুরি’।মামলাকারীদের অভিযোগ, -‘প্রতিবছরই কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর কর্মচারীদের ডিএ দিলেও এরাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে কর্মচারীদের ডিএ বকেয়া রাখা হয়েছে। বকেয়া ডিএর পরিমাণ প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা’। বারবার রাজ্যকে অনুরোধ উপরোধ করেও কাজ না হওয়ায় বকেয়া ডিএ-র দাবিতে রাজ্যের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশ।ওই মামলায় রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘভাতা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার জন্য গত বছর ২০ মে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এজন্য রাজ্যকে তিনমাসের সময়সীমাও বেঁধে দেয় আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে পাল্টা মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং বিচারপতি পঙ্কজ মিথিলের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে মামলাটি। সেখানে রাজ্যের তরফেই প্রথম শুনানির দীর্ঘসূত্রিতার কথা বলা হয়।রাজ্যের তরফে হাজির ছিলেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তিনি বলেন, ”কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ডিএ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। রাজ্যের প্রায় চার লাখের কাছাকাছি কর্মীর জন্য রাজ্যের উপরে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকার বোঝা পড়বে। তাই এই মামলায় দীর্ঘ শুনানির প্রয়োজন আছে।” রাজ্যের যুক্তি শোনার পর দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, -‘যেহেতু মামলাটির দীর্ঘ শুনানির প্রয়োজন রয়েছে, তাই মামলাটির শুনানির জন্য নির্দিষ্ট দিন ঠিক করা হবে। যদিও সেই দিন বা তারিখ কবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি বেঞ্চের তরফে।ডিএ মামলার রায়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী। গত বছর ৫ ডিসেম্বর মামলাটি প্রথম বার শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টে ওঠে। পরে শুনানির দিন পিছিয়ে ১৪ ডিসেম্বর করা হয়। পাশাপাশি, এই মামলা শুনানির জন্য নতুন ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করা হয়। সেখানে ছিলেন দুই বিচারপতি, বিচারপতি হৃষীকেশ রায় এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। কিন্তু শুনানির দিনই মামলাটি থেকে সরে দাঁড়ান বিচারপতি দত্ত। এরফলে মামলার শুনানি হয়নি। তার পর থেকে যতবারই শুনানির দিন ঠিক হয়েছে ডিএ মামলার, তত বারই কোনও না কোনও কারণে পিছিয়ে গিয়েছে মামলাটি।