পুবের কলম প্রতিবেদক: গত বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাঁটু ও কোমরের ব্যথার চিকিৎসা সম্পন্ন হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি দেখতে সেই হাসপাতালের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফিজিক্যাল মেডিসিন প্রধান রাজেশ প্রামাণিক মমতার কালীঘাটের বাড়িতে যান।
জানা গিয়েছে, এখন মুখ্যমন্ত্রীর পায়ের ব্যথা কমেছে। অল্প অল্প হাঁটাচলা শুরু করেছেন তিনি। তাই এখন মুখ্যমন্ত্রীর আর ফিজিওথেরাপি করার প্রয়োজন নেই। তবে সদ্য চোটের চিকিৎসা হয়েছে, তাই স্বাভাবিক হাঁটাচলায় ফিরতে একটু সময় লাগবে। অল্প অল্প করে হাঁটাচলা করে ধীরে ধীরে তা বাড়াতে হবে। চিকিৎসকরা তাঁকে এ বিষয়ে নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। বাড়িতেই অল্প অল্প করে হাঁটার পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার বিভ্রাট নিয়ে তদন্তে নেমেছে ডিজিসিএ। মুখ্যমন্ত্রী যে বেসরকারি হেলিকপ্টারের সওয়ারি হয়েছিলেন ঘটনার দিন সেই হেলিকপ্টারেব ডিজিটাল ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার এ থাকা তথ্য খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তাঁরা। ঘটনার দিন ক’টার সময়ে হেলিকপ্টার উড়েছিল, ওয়েদার রাডার এ কোনও আগাম সতর্কতা ছিল কি না, কটার সময়ে হেলিকপ্টার মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিল, সে সব তথ্যই এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন জলপাইগুড়ির ক্রান্তির সভাস্থল থেকে হেলিকপ্টারে বাগডোগরা পৌঁছনোর কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু, মাঝপথে দুর্যোগের মুখে পড়ে মুম্বইয়ের একটি সংস্থা থেকে ভাড়া নেওয়া সেই হেলিকপ্টার। দৃশ্যমানতা প্রায় তলানিতে চলে যায়। ঝড়-বৃষ্টিতে বিপজ্জনক ভাবে দুলতে থাকে হেলিকপ্টারটি। বেগতিক দেখে হেলিকপ্টারের দুই পাইলট শালুগাড়ায় সেনাবাহিনীর হেলিপ্যাডে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে জরুরি অবতরণ করেন। অভিযোগ, খারাপ আবহাওয়ার জন্য দুলুনিতে এবং শালুগাড়ায় সিঁড়ি না থাকায় হেলিকপ্টার থেকে নামতে গিয়ে কোমরে ও হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঘটনার কথা জানতে পেরে সমস্ত তথ্য চেয়ে পাঠায় ডিজিসিএ। প্রধানত দু’টি প্রশ্ন ওঠে। এক, ওই আধুনিক হেলিকপ্টাবে ওয়েদার রাডারû রয়েছে। কোনও গন্তব্যে রওনা হওয়ার আগে আকাশপথে কোথাও দুর্যোগ রয়েছে কি না, তা আগেভাগে জেনে যাওয়ার কথা ছিল পাইলটদের। প্রশ্ন, সে দিন কি হেলিকপ্টারেব ওয়েদার রাডারû মারফত সেই দুর্যোগের কথা জানা যায়নি? যদি জানা গিয়ে থাকে, তা হলে তার পরেও কেন ঝুঁকি নিয়েছিলেন পাইলট? দ্বিতীয় প্রশ্ন, মাঝপথে কোনও দুর্যোগে পড়লে সাধারণত যেখান থেকে রওনা হয়েছিল হেলিকপ্টার সেখানেই ফিরে আসার কথা। এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। কেন তা করা হয়নি সেটাও খতিয়ে দেখছেন আধিকারিকেরা।