পারিজাত মোল্লাঃ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার বিধি বেঁধে দিল।গত সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, -‘প্রতি বুথেই সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী থাকবে ‘। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, -‘ বুথে কি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে’? এর প্রতুত্তরে রাজ্য নির্বাচন কমিশন বলেছিল, -‘নির্বাচন কমিশন সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে ফারাক করছে না।কেন্দ্রীয় বাহিনীও সশস্ত্র পুলিশ আর রাজ্যের বাহিনীও সশস্ত্র’।কমিশনের এই কথা শুনে বিরোধীরা বলতে শুরু করেছিলেন, তার মানে বুথের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা হবে না। বুথে থাকবে শুধু রাজ্যের পুলিশ। তবে এদিন পঞ্চায়েত মামলায় সেই জট কাটিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।এদিন এই মামলার শুনানি পর্বে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ জানিয়েছে, -‘মোট ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে পঞ্চায়েত ভোটে। তার মানে ৬৫ হাজার অ্যাকটিভ ফোর্স। আর রাজ্যের থাকছে ৭০ হাজার সশস্ত্র পুলিশ। এই দুই বাহিনীকে ৫০:৫০ অনুপাতে ব্যবহার করতে হবে’।ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে -‘ আদালত সম্ভবত বোঝাতে চেয়েছে যে, প্রতি বুথে যে সংখ্যায় রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ থাকবে, ঠিক সমান সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করতে হবে’। কিউআরটি তথা ক্যুইক রেসপন্স টিমেও তাহলে শুধু রাজ্যের পুলিশ রাখলে চলবে না, রাখতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীও।কেন্দ্রীয় বাহিনী যে ৮০০ কোম্পানি বাহিনী পাঠাচ্ছে তার মধ্যেই সবাই সশস্ত্র পুলিশ নন। প্রতিটি কোম্পানিতে রান্নার লোক, ড্রাইভার ইত্যাদি সাপোর্ট স্টাফ মিলিয়ে প্রায় ১৫ জন থাকেন। অর্থাত্ এক কোম্পানিতে ৬৫ জনের অ্যাকটিভ ফোর্স থাকছে। সেই হিসাবটাই বলেছেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির আরও নির্দেশ -‘ বিএসএফের আইজি পদ মর্যাদার অফিসার ফোর্স কো-অর্ডিনেটর হিসাবে কাজ করবেন। কোথায় কত ফোর্স পাঠাতে হবে তিনিই স্থির করবেন। অর্থাত্ বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারটা আর পুরোপুরি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকল না’। এদিন আরও একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, -‘ প্রথম নির্দেশেই আদালত জানিয়েছিল যে পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তার মানে শুধু ভোটের দিন নয়। গোটা পঞ্চায়েত ভোট চলাকালীন বাহিনী মোতায়েনের কথা বলা হয়েছিল। অর্থাত্ ফল ঘোষণা পর্যন্ত বাহিনী মোতায়েন রাখতে হবে’। এখন দেখার রাজ্য নির্বাচন কমিশন কি ভূমিকা নেয়? নাকি সুপ্রিম কোর্টে পুনরায় দারস্থ হবে তারা….