পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক : এমিলিয়েনো মার্টিনেজ আসবেন। বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার গোলকিপার। সকাল থেকেই তাই মিলন মেলা প্রাঙ্গনে ভিড়ের রূপটা দেখলে চমকে উঠতে হয়। রাস্তা জ্যাম তো আছেন। উল্টোদিকেই রয়েছে সাইন্স সিটি। অন্য দিন হলে সেখানে কাঁড়ি কাঁড়ি লোকের ভিড়। কিন্তু গোটা ভিড়টাই মঙ্গলবার সকালে পরিবর্তিত হয়ে গেল উল্টোদিকের লেনে মিলন মেলা চত্ত্বরে।
অনেকদিন হল মিলন মেলায় আর বইমেলা হয় না। নতুন করে তৈরি হওয়া মিলন মেলায় সত্যিই যেন মিলনের বার্তা নিয়ে এমিলিয়েনো মার্টিনেজ। বাংলাদেশ থেকে গতকাল তিনি যখন কলকাতায় পা দেন, বিমানবন্দরেই দেখা গিয়েছিল তাঁকে ঘিরে উন্মাদনার বহরটা ঠিক কতখানি। সেটা যে মঙ্গলের সকালে বাঁধ ভাঙবে তাতে আর আশ্চর্য হওয়ার কি আছে? কিন্তু উন্মাদনা যে কতটা বিশৃঙ্খলতায় পৌঁছতে পারে তারও একটা নিদর্শন দেখল শহর কলকাতা।
পুলিশি বন্দোবস্ত ভালোই ছিল। কিন্তু তার মধ্যেও মঞ্চে মার্টিনেজকে ছুঁয়ে দেখার উদ্দেশ্যে অনেকেই উঠে গেলেন। যদিও পুলিশ তাঁদের আটকে দেন। তবে বিশৃঙ্খলা চূড়ান্ত রূপ নেয়, যখন ঝামেলার চোটে খোদ মার্টিনেজেরই গাড়ির কাচ ভাঙল। বিশ্বজয়ী গোলকিপার কিন্তু এত কিছু দেখেও অদ্ভুত শান্ত। তাঁর জন্য এত মানুষ আসতে পারেন, এটা কল্পনাও করতে পারেননি এমি মার্টিনেজ। তার চেয়েও বেশি অবাক হয়েছেন এত মানুষের আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে তাঁকে সমর্থন জানানোর বিষয়টি। রাতে ছিলেন একেবারে মিল মেলা প্রাঙ্গনের লাগোয়া বিলাসবহুল হোটেলে।
কিন্তু সেখান থেকে মিল মেলায় অনুষ্ঠান মঞ্চে পৌঁছতে মার্টিনেজ ২০-২৫ মিনিট দেরি করে ফেললেন। কারণটা ছিল নিরাপত্তা। কেননা মিলন মেলা প্রাঙ্গন তখন ভিড়ে ঠাসা। সেই ভিড় ঠেলে মঞ্চে পৌঁছতে সময় লেগে যায় মার্টিনেজের। বিশ্বকাপজয়ী গোলকিপার মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই অগুনতি মানুষ ছোটেন তাঁর দিকে, একটু যদি মঞ্চে মার্টিনেজের পাশে জায়গা পাওয়া যায়। আর সেই হুড়োহুড়িতেই ব্যারিকেড ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। পুলিশের প্রায় কুড়ি মিনিট সময় লাগে সেটা সামলাতে।
লাল হলুদ কর্তা দেবব্রত সরকার তাঁকে ইস্টবেঙ্গলের জার্সি পরিয়ে দেন। ‘জয় ইস্টবেঙ্গল’ ধ্বনিতে আওয়াজও তোলেন এমি মার্টিনেজ। তারপরই মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্তও তাঁকে পরিয়ে দিলেন মোহনবাগান জার্সি। কিন্তু একটি আজব দৃশ্য দেখা গেল। মোহনবাগানের লোগাতে এটিকে লাগানো, আর ইস্টবেঙ্গলেরও লোগাটাও পুরনো। ক্ষোভে ফেটে পড়েন মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। শুধু জার্সি নয়, ব্যাকড্রপেও দুই প্রধানের লোগোতে ভুল চোখে পড়ল।