পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বিবাহকে বলা হয় পবিত্র সামাজিক বন্ধন। সেই সম্পর্কের বাঁধনকে মর্যাদা দিতে এবং দ্রুততার সঙ্গে আইনি স্বীকৃতি দিতে আইন পরিবর্তন করতে পারে সরকার। জানা গিয়েছে, দিল্লি সরকারের মতো এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারও হিন্দু বিবাহ আইনে রদবদল ঘটিয়ে সামাজিক বিয়ের একদিনের মধ্যে রেজিস্ট্রি সেরে ফেলার ব্যবস্থা শুরু করতে চলেছে। বর্তমানে হিন্দু বিবাহ আইনে সামাজিক বিয়ে শেষে আবেদন করলে রেজিস্ট্রির জন্য ৭ দিন সময় লাগে। তারপর অষ্টম দিনে রেজিস্ট্রি করতে পারেন নব দম্পতি। এবার তা কমে ১ দিনের মধ্যে হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান নিয়মে সামাজিক বিয়ের দিন অথবা তারও আগে যাঁরা রেজিস্ট্রি সেরে ফেলতে চান তাঁদের ন্যুনতম ৩০ দিন আগে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের ১৩ নম্বর ধারায় আবেদন করতে হয়। এবার তৎকাল বিবাহ ব্যবস্থা চালু হলে বিয়ের ১ দিনের মধ্যেই রেজিস্ট্রি সেরে ফেলতে পারবেন দম্পতি। এর ফলে অহেতুক সময় নষ্টের হাত থেকে বাঁচবেন নব দম্পতিরা। তবে এই তৎকাল বিয়ে হবে শুধুমাত্র হিন্দু বিবাহ আইনের মাধ্যমেই হবে। অন্যরা তার সুবিধা পাবে না। নবান্ন সূত্রে খবর, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকেই নয়া নিয়ম চালু হয়ে যাবে। নিয়ম বদলের খসড়া ইতিমধ্যেই প্রস্তুত হয়েছে। শীঘ্র তা রাজ্য মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। সেখান থেকে ছাড়পত্র চলে এলেই শুরু হয়ে যাবে প্রক্রিয়া। এর পাশাপাশি বিদেশে যাঁরা থাকেন তাঁদের জন্যও অনলাইনে রেজিস্ট্রির আবেদনের সুযোগ খুলে দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের কাছে গিয়ে রেজিস্ট্রি করলে সরকারের কোষাগারে জমা পড়ে ১২৫ টাকা। আর রেজিস্ট্রার বাড়িতে এলে জমা পড়ে ২২৫ টাকা। সরকারিভাবে খবর, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত হিন্দু বিবাহ আইনে ৩১ হাজার ৬০১টি বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে এই পশ্চিমবঙ্গে। আর স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের ১৩ ধারার আওতায় রাজ্যে ৪৫ হাজার ৫৩৮টি বিয়ে হয়েছে। অন্যদিকে একই আইনের ১৬ নম্বর ধারার আওতায় ৪ হাজার ৫৪৪টি বিয়ে হয়েছে। তাতে সরকার এবছর প্রায় ১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা রোজগার করেছে।
জানা গিয়েছে, দেশের মধ্যে প্রথম দিল্লিতে তৎকাল বিয়ে চালু হয়। ভারতবর্ষের অন্য কোনও প্রদেশে এই ব্যবস্থা চালু নেই। এবার অন্য রাজ্যগুলিকে পিছনে ফেলে দেশের দ্বিতীয় রাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে চালু হতে চলেছে তৎকাল বিয়ে। বিদেশে বা অন্য প্রদেশে যাঁরা কর্মসূত্রে থাকেন সময় বাঁচাতে অনলাইন পদ্ধতি চালু হবে। এতদিন কমপক্ষে ৮ দিন রেজিস্ট্রির জন্য অপেক্ষা করতে হতো তাঁদের। তৎকাল চালু হলে সামাজিক বিয়ের ১ দিনের মাথায় রেজিস্ট্রি হয়ে যাবে। ফলে সময় নষ্টের হাত থেকে রেহাই পাবেন তাঁরা।