পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোটের দাবিতে আদালতে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলার রায়ে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে হবে। আদালতের নির্দেশানুসারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে ৮২২ বাহিনী চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। এর মধ্যে ৩৩৭ কোম্পানী রাজ্যে এসে পৌঁছালেও ৪৮৫ বাহিনী এ’নও রাজ্যে এসে পৌঁছায়নি। বাকী বাহিনী দিতে বিলম্ব করায় রবিবার ফের কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানালো রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে হবে। আর ২০১৩ সালের নির্বাচনের থেকে বেশি বাহিনী নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
আগামী ৮ জুলাই ভোট। আর এই ভোটের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী আনতে বিরোধীরা বার বার আদালতে ছুটেছে। আদালতও বিরোধীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। নির্দেশ দিয়েছে ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে যে পরিমাণ বাহিনী বাংলায় এসেছিল তার থেকে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে ভোট করাতে হবে। এমনকী অর্থের অভাব যাতে সেই বাহিনী আনার পথে কাঁটা হয়ে না দাঁড়ায়, তার জন্য খরচ আদালত চাপিয়েছে কেন্দ্রের ঘাড়ে। বাহিনীর সমস্ত ব্যায়ভার বহন করবে কেন্দ্র সরকার।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন এর আগেও ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দ্রুত পাঠাতে বলে চিঠি দিয়েছিল অমিত শাহের মন্ত্রককে। কিন্তু সেই চিঠির কোনও উত্তর আসেনি। এদিন আবারও চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন। যদিও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর খুব দ্রুত না আসার সম্ভাবনাই বেশি। কেননা অমিত শাহ এখন অনেক বেশি চিন্তিত মণিপুর নিয়ে। একই সঙ্গে কেদারনাথ যাত্রা স্থগিত রাখা হলেও সেই যাত্রার জন্য বাহিনী আলাদা করে রিজার্ভ রাখতে হচ্ছে। সেই বাহিনী অন্য কোথাও পাঠানো যাবে না। আবার দেশের বেশ কিছু রাজ্যে ভারী বর্ষণের ফলে উদ্ধারকার্যের জন্যও কেন্দ্রীয় বাহিনী নামাতে হচ্ছে। তাই বাংলার বুকে ৮২২ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো শাহের কাছে এখন বেশ চাপের। কেন্দ্র আরও ৬৩ কোম্পানি বাহিনী পাঠাতে পারে। সেক্ষেত্রে মোট ৪০০ কোম্পানি বাহিনী দিয়েই পঞ্চায়েত ভোট সারতে হবে। যদিও সেক্ষেত্রে প্রশ্ন থাকছে, আদালতের নির্দেশ মান্যতা পেল কিনা। কেননা আদালতের নির্দেশ ছিল ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলায় যত কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল, সেই সংখ্যক বা তার বেশি বাহিনী এনে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচন করাতে হবে।
যদিও কেন্দ্রের একটি সূত্রের দাবি, বাহিনীর ব্যবহার নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা স্পষ্ট নয়। কোন এলাকায় কত বাহিনী ব্যবহার করা হবে তাঁরা তাও জানায়নি। অন্য দিকে, বাহিনী মোতায়েন নিয়ে হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্যও চর্চার মধ্যে উঠে এসেছে। গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকারের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) অশোককুমার চক্রবর্তী আদালতকে জানিয়েছিলেন, কমিশনের আবেদন মতো দু’ধাপে ইতিমধ্যে ৩৩৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে বাহিনী মোতায়েনের ক্ষেত্রে ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মডেল অনুসরণ করলে সুবিধা হয়। অর্থাৎ প্রকারন্তরে কেন্দ্র স্বীকার করেই নিয়েছিল ৮২২ কোম্পানি বাহিনী তাঁরা পাঠাতে পারবে না। বিজেপি সূত্রে খবর, এই বাহিনী পাঠানোর বিষয়টি এখন বিশ বাঁও জলে চলে গিয়েছে। এদিকে বিরোধীরাও চাইছে কীভাবে ভোটের দফা বাড়ানো যায়। এই নিয়ে বিরোধীরা বার বার দাবি জানিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় বাহিনীদিয়ে ভোট করাতে হবে। একশো শতাংশ বুথেই রা’তে হবে কেন্দ্রেীয় বাহিনী। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সমস্ত বাহিনী না পাঠালে কীভাবে বুথগুলিতে একশো শতাংশ বাহিনী রাখা সম্ভব।