পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ইউপিএসসি-২০২২’এর ফলাফল। সেই পরীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে যে ক’জন উত্তীর্ণ হয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এম এল জুবিলি ইন্সটিটিউশনের এক প্রাক্তনী। সোমবার সেই প্রাক্তনী বুরহান উজ-জামানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় কলকাতা খিলাফত কমিটির উদ্যোগে। এম এল জুবিলি ইন্সটিটিউশনে এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খিলাফত কমিটির সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান, কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, খিলাফত কমিটির সম্পাদক নাসির আহমেদ, আনোয়ার প্রেমী, পুবের কলম-এর সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান, জুবিলি স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার আলি, সাংসদ নাদিমুল হক, কাউন্সিলর সুপর্ণা দত্ত, রেহানা খাতুন, ফৈয়াজ আহমেদ খান, ডা. এম এন হক, সমাজসেবী মুহাম্মদ খলিল, ইরফান আলি তাজ, ইশাহাক মল্লিক প্রমুখ।
এ দিনের অনুষ্ঠানে ফিরহাদ হাকিম বলেন, শতাব্দীপ্রাচীন স্কুল জুবিলি ইন্সটিটিউশন থেকে আগে একজন আইপিএস হয়েছিল। ফের বুরহান ইউপিএসসি পাশ করেছে, আমাদের আশা সে বাংলাতেই পোস্টিং পাবে। এই স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ফিরহাদ। তাঁর কথায়, যাদের অনেক টাকা রয়েছে তারা দামি স্কুলে ছেলেমেয়েদের পড়াচ্ছে, আর গরিব ঘরের পড়ুয়ারা জুবিলির মতো প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। ফলে স্কুলের পরিকাঠামো এমন হতে হবে যাতে পড়ুয়ারা স্কুলের কাঠামো দেখেই স্কুলে আসতে চায়। তারা পড়াশোনা করে বাংলা ও কওমের মুখ উজ্জ্বল করবে বলেও তাঁর আশা। তিনি আরও বলেন, বাংলা, উর্দু ও হিন্দি মাধ্যমের পড়ুয়া কমছে তাই মাতৃভাষা অবশ্যই থাকবে তবে জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক স্তরে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে ইংরেজি মাধ্যমের উপর জোর দিতে হবে।
এ দিকে আহমদ হাসান ইমরান বলেন, জুবিলির মতো অনেক প্রাচীন স্কুল রয়েছে। তবে বাংলা, ইংরেজি, উর্দু ও হিন্দি মিলিয়ে চারটি মিডিয়ামে পড়াশোনা হওয়া স্কুল বিরল। নানান সমস্যার জন্য জুবিলি স্কুল তার কৌলিন্য হারাচ্ছে তা পুনরুদ্ধার করার আহ্বান জানান ইমরান। তিনি আরও বলেন, এম এল জুবিলি স্কুল অনেক প্রাচীন। জুবিলির মতো সাখাওয়াত মেমোরিয়াল, ইসলামিয়া কলেজে মুসলিম ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার সুযোগ পেত। সমাজকে দিশা দেখাতে এই স্কুলগুলির বড় ভূমিকা আছে। এর অবদানকে আমাদের স্বীকৃতি দিতে হবে। ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে থাকা জুবিলি স্কুলের অবস্থা জরাজীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে স্কুলকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে কলকাতা খিলাফত কমিটি। তার জন্য খিলাফত কমিটির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান আহমদ হাসান ইমরান।
জাভেদ আহমেদ খান বলেন, আমরা স্কুলের প্রশাসনিক দিকে হস্তক্ষেপ করছি না। শুধুমাত্র স্কুলের মানোন্নয়ন ও হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে জুবিলিকে দত্তক নিয়েছি। স্কুলের ঐতিহ্য ফেরাতে এবং ছাত্র ভর্তির হার বাড়াতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান জাভেদ খান। বাংলা, হিন্দি ও উর্দু মিডিয়ামে পড়ুয়ারা যাতে বেশি বেশি করে ভর্তি হয় তার জন্য তিনি স্থানীয় কাউন্সিলর সুপর্ণা দত্তকে নজর দিতে বলেন।
অন্যান্যদের মধ্যে নাদিমুল হকও শিক্ষার মানোন্নয়নের দিকে নজর দিতে বলেন। তাঁর কথায়, কওমের উন্নতির জন্য আরও বেশি বেশি করে শিক্ষার দিকে নজর দিতে হবে। নাসির আহমেদ, আনোয়ার প্রেমী বা অন্যান্যরাও জুবিলি স্কুলের পাশে থেকে পুরানো ঐতিহ্য ফেরানোর কথা বলেন। একইসঙ্গে কলকাতার মেয়র জানান, তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা হয়েছে। জুবিলি স্কুলের শৌচাগারের যে সমস্যা রয়েছে তার জন্য টাকা দেবে পুরনিগম। এ দিনের অনুষ্ঠানে শ্রোতা-দর্শকদের মধ্যে ছিলেন সাইফুল হক, উজমা আলম প্রমুখ।