পুবের কলম প্রতিবেদকn দীর্ঘ চার মাসের চেষ্টায় শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে আসা রোগীকে সুস্থ করে তুললেন এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হাওড়ার বাগনান থেকে কলকাতার অন্যতম সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএমে ভর্তি হয়েছিলেন ৩৮ বছর বয়সী কোহিনুর নীহার বেগম। জানুয়ারি মাসে তিনি প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। তবে ওই মহিলার শারীরিক অবস্থা এতটাই বিপজ্জনক ছিল, তাতে কোনও রকম আশাই দেখতে পাচ্ছিলেন না হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে হাল ছাড়েননি কেউই। আর সেই প্রচেষ্টাতেই চার মাস পর ঘটল মিরাকেল। চারমাস বাদে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন কোহিনুর নীহার বেগম।এসএসকেএম হাসপাতালে ওই রোগীকে ভর্তি করে জানা যায়, তিনি পালমোনারি এমবোলিজিম রোগে আক্রান্ত। মূলত এই রোগের ফলে ফুসফুসের রক্ত সরবরাহ থেকে বাধা তৈরি হয়। তার ফলে ফুসফুসে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে দেখা যায়।
বেগমের চিকিৎসার জন্য বিশেষ টিম গঠন করা হয় হাসপাতালের পক্ষ থেকে। হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক অলকেশ কুমার কোলের তত্ত্বাবধানে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। আর্টারিতে ব্লকেজ তো ছিলই, পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল ওই মহিলার। অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল তাঁকে। শারীরিক পরীক্ষা করার সময় পালমোনারি এমবোলিজিম ধরা পড়ে।তবে এই চিকিৎসার জন্য শিরার ধমনির থেরাপি প্রয়োজন। কিন্তু এই ব্যক্তির আর্টারিতে সমস্যা থাকার জন্য তাঁকে ওই থেরাপির পাশাপাশি আরও বেশ কিছু চিকিৎসার মধ্যে রাখা হয়েছিল বলেই জানান চিকিৎসক।
প্রায় আড়াই মাস ধরে থেরাপির করা পর অস্ত্রোপচার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মেডিক্যাল টিম। চিকিৎসক দলের কথা মতো ওই মহিলার থ্রোম্বোসিস কেটে বাদ দেওয়া হয়। কিন্ত তারপরে অবস্থা আরও জটিল হয়ে পড়ছিলেন।বেশ কিছুদিন তাঁকে ভ্যান্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। তারপরেও চিকিৎসকদের নজরে রাখা হয়েছিল ওই ব্যক্তিকে। অবশেষে এই চারমাসের দীর্ঘ কঠিন লড়াইয়ে জয়ী হলেন চিকিৎসকরা। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন বাগনানের কোহিনুর নীহার বেগম।
এই রোগের চিকিৎসা করাতে হলে বেসরকারি হাসপাতালে খরচ হত প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। তবে কোহিনুর নীহার বেগমের স্বামী পেশায় ইলেকট্রিকের মিস্ত্রি। তাই কোনও ভাবেই এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয় তাঁদের পক্ষ থেকে। এস এস কে এম হাসপাতালে বিনা পয়সায় হয় চিকিৎসা।