পারিজাত মোল্লা: আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পক্ষেই সায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট এর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। বিশেষ করে রাজ্যের যে ৭টি জেলাকে কমিশন স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করেছিল, সেই সব ক’টি জেলায় অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।
আদালত মনে করছে, ‘ ভয়মুক্ত পরিবেশের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়া উচিত কমিশনের’। আপাতত স্পর্শকাতর জেলায় মোতায়েন করতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাকী যে জেলাগুলি পর্যাপ্ত রাজ্য পুলিশ থাকবে না, সেই জেলাগুলিতে মোতায়েন করতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সব বুথে লাগাতে হবে সিসিটিভি, না হলে ডিভিয়োগ্রাফি করতে হবে’। শুধু তাই নয়, ভোটের অস্থায়ী কর্মীদের কাজের সীমাও বেঁধে দিয়েছে হাইকোর্ট । এদিন হাইকোর্টের নির্দেশ, ‘ফোর্থ অফিসারের বাইরে অস্থায়ী কর্মীদের ডিউটি দেওয়া যাবে না। সার্কুলারের বাইরে গিয়ে কোনও কাজ করা যাবে না সিভিক ভলান্টিয়াদের’। আদালত জানিয়েছে, ‘ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা কমিশনের দায়িত্ব। কেন্দ্রীয় বাহিনী যদি মোতায়েন করা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা দেবে রাজ্য পুলিস’। গত বৃহস্পতিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
আগামী ৮ জুলাই একদফাতেই দার্জিলিং-কালিম্পংয়ে দ্বিস্তরীয় ও বাকি রাজ্যে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট, সাংবাদিক বৈঠকে জানান রাজ্যের সদ্যনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণা ১১ জুলাই। এখন মনোনয়ন জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। রাজ্যে লাগু হয়ে গিয়েছে নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি। যে সাতটি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে পঞ্চায়েত ভোট হবে সেগুলি একনজরে—পূর্ব মেদিনীপুর,বীরভূম,উত্তর চব্বিশ পরগনার একাংশ,দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা,জলপাইগুড়ি, হুগলি ও মুর্শিদাবাদ।পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত একাধিক বিষয় নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। দু’টি পিটিশনেই অভিন্ন আর্জি ছিল, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে সারা রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হোক। গোটা রাজ্যের ক্ষেত্রে সেই নির্দেশ না দিলেও শুভেন্দুর জেলা পূর্ব মেদিনীপুর ও অধীরের জেলা মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
এছাড়াও অনুব্রত মণ্ডলের বীরভূম জেলা রয়েছে এই তালিকায়। আদালতের নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, স্পর্শকাতর বুথগুলিতে সিসি ক্যামেরা রাখতে হবে। সেইসব বুথের সমস্ত ফুটেজ সংরক্ষিত রাখতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে তত্ত্বাবধান করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে পঞ্চায়েত ভোট পিছোচ্ছে না। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ৮ জুলাইতেই ভোটগ্রহণ হবে। আদালত বলেছে, যদি কমিশন চায় তাহলে মনোনয়নের সময়সীমা বাড়াতে পারে।এখন দেখার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে?