পুবের কলম প্রতিবেদক: অত্যাধূনিক বার্ণ ইউনিট গড়ল এমআর বাঙুর হাসপাতাল। অগ্নিদগ্ধ রোগীদের জন্যে সিসিইউ পরিষেবার ব্যবস্থা হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে। টালিগঞ্জের এম আর বাঙুর হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ রোগীদের জন্য অত্যাধুনিক দু’টি বার্ন ইউনিট আছে। একটিতে ৩৬টি শয্যা, অন্যটিতে ৩৪টি। সবমিলিয়ে ৭০টি বেড এখানে। এর মধ্যে ৬-৭টা ডরমেটরি বেড বাদ দিলে বাকিগুলি কেবিন। এবার দগ্ধ রোগীদের জন্যে আলাদা সিসিইউ চালু করল বাঙুর।
দোতলায় মূল সিসিইউর উলটোদিকে এই ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট খোলা হয়েছে। হাসপাতালের সুপার ডাঃ শিশির নস্কর জানিয়েছেন, ‘ক্রস ইনফেকশন’-এর ভয়ে অগ্নিদগ্ধ রোগীদের অন্য রোগীদের সঙ্গে রাখা যায় না। দগ্ধ রোগীরা সংকটজনক হয়ে পড়লে সমস্যা হচ্ছিল। এবার সিসিইউতে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হল।
চিকিৎসকদের অসহায়তা কমল। সলতে পাকানোর কাজ অনেকদিন ধরেই চলছিল। কিন্তু বারবার সামনে এসে দাঁড়াচ্ছিল সংক্রমণের সমস্যা। বিষয়টি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে জানানো হয়েছিল। তিনিই আলাদা সিসিইউ তৈরির ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলেন। আসলে, ৭০ বেডের বার্ন ওয়ার্ডে একটা বড় অংশের রোগীর ক্রিটিক্যাল কেয়ারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তা না থাকায় এতদিন রোগী সংকটজনক হলেই অন্যত্র ‘রেফার’ করতে হচ্ছিল। এবার এখানেই তৈরি হচ্ছে আলাদা সিসিইউ।
জানা গিয়েছে, নতুন ইউনিটের দায়িত্বে থাকবেন সিসিইউ বিশেষজ্ঞ ডা সুরঞ্জন সান্যাল। তাঁর পর্যবেক্ষণ, অগ্নিদগ্ধ রোগীদের ‘ওপেন সারফেস স্কিন’’।
দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা চলে। ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল। সিসিইউতে থাকা অন্য রোগীদের থেকে জীবাণু ছড়াতেই পারে। আবার উলটোটাও হতে পারে। অগ্নিদগ্ধ রোগীর থেকে সংক্রমিত হতে পারেন সিসিইউতে থাকা মুমূর্ষু রোগীরা। সে ক্ষেত্রে তাঁদের জীবন সংশয় পর্যন্ত তৈরি হয়।
এই ‘ক্রস ইকফেকশন’-এর ভয়েই সরকারি হাসপাতালের সিসিইউ-তে অগ্নিদগ্ধ রোগী রাখা হয় না। তাই আলাদা ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু, জেলা হাসপাতাল তো বটেই, রাজ্যের কোনও মেডিক্যাল কলেজে এই ব্যবস্থা নেই। এখানেই সবাইকে টেক্কা দিল বাঙুর। অগ্নিদগ্ধ রোগী সংকটজনক হলে ডাক্তাররা তাঁদের বাঁচাতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে লড়াই চালাতে পারছিলেন না। ভেন্টিলেশন সাপোর্টের জন্য বেসরকারি হাসপাতালে ‘রেফার’ করতে হচ্ছিল। অগ্নিগদ্ধ রোগীদের জন্য আস্ত একটা সিসিইউ তৈরি করল। আলাদা ঘর, আলাদা পরিকাঠামো। আপাতত তিনটি শয্যা নিয়ে এই স্পেশ্যাল সিসিইউ চালু হচ্ছে। এতে রাজ্যবাসীর জন্য সুবিধা হবে।
হাসপাতালের সুপার ডা. শিশির নস্কর পুবের কলমকে বলেন, পারস্পরিক সংক্রমণ এড়াতে আপাতন তিন শয্যার এই ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। এতে সাধারণ বেডের মানুষের মধ্যে সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।