কৌশিক সালুই বীরভূম – বালেশ্বরের রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বীরভূমের এক পরিযায়ী শ্রমিক মহিলার। এছাড়াও এক যুবক শনিবার বিকেল পর্যন্ত নিখোঁজ এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরো একজন কটকের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন কমবেশি জখম হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলাশাসক বিধানরায় এবং সিউড়ি বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী ওই সমস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে বালেশ্বর এর ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত মহিলা হলেন রিতা বাগদি বয়স ৩৭ বছর। মাস কয়েক আগে স্বামী ও সন্তানদের সঙ্গে কাজ করার জন্য ব্যাঙ্গালোর গিয়েছিলেন। তাদের বাড়ি দুবরাজপুর থানার গোহালি হারা গ্রাম পঞ্চায়েতের পলাশবন গ্রাম। মৃত মহিলার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে যশবন্তপুর হাওড়া ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিলেন। বালেশ্বর এর কাছে করমন্ডল এক্সপ্রেস, মালগাড়ি ও যশবন্তপুর হাওড়া এক্সপ্রেস সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে ই ওই মহিলা মারা যান। স্বামী স্বাধীন বাগদি এবং সঙ্গে থাকা কল্পনা বাগদি, তাপস বাগদি এবং শম্পা মৃধ্যা কম-বেশি চোট গ্রস্ত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর তারা রাতেই ঘটনাস্থল থেকে রওনা দিয়ে শুক্রবার দুবরাজপুরের বাড়িতে চলে আসেন। যদিও মৃত রিতা বাগদির মৃতদেহ এখন উড়িষ্যতেই আছে। এছাড়াও ওই একই ট্রেনে ছিলেন সিউড়ি থানার নগরী গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝোরা করমকাল গ্রামের পাঁচজন।
এদের মধ্যে লাভলু মাল নামে এক যুবকের খোঁজ শনিবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ওই গ্রামের মহিম ডোম নামে এক যুবক পায়ে গুরুতর চোট পেয়ে কটক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসাধীন যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে ওই হাসপাতালে যাওয়া হয়েছে। যারা ইতিমধ্যেই বীরভূমের ফিরে এসেছেন এবং অল্প বিস্তর চোট আঘাত লেগেছে তাদেরকে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
এদিকে সিউড়ির বিধায়ক তথা বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী, জেলাশাসক বিধান রায় দুর্ঘটনা গ্রস্থ ট্রেনের যাত্রীদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। বীরভূম জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহত ও নিহতদের পরিবার সমস্ত ধরনের সহায়তা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ওই সমস্ত যাত্রীরা সকলেই ব্যাঙ্গালোরে কেউ রাজমিস্ত্রি কেউবা স্থানীয় ফুলের বাগানে পরিচর্যার কাজে যুক্ত ছিলেন। নিখোঁজ যুবকের স্ত্রী যমুনা মাল বলেন,” দুর্ঘটনার পর মোবাইলে সুইচ বন্ধ। স্বামীর সঙ্গে যারা ট্রেনে ফিরছিলেন সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলেও তার সঙ্গে এখনো পর্যন্ত কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছি না। নাবালক দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে খুব চিন্তায় আছি”।
নিহত মহিলার স্বামী সন্ন্যাসী বাগদি বলেন,” চার মাস আগে সপরিবারে আমরা ব্যাঙ্গালোরে কাজের জন্য গিয়েছিলাম। তারপরে, চেনা ফেরার সময় ওই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলো ঘটনাস্থলেই স্ত্রী মারা যায়। আমরা অল্পবিস্তর আঘাত নিয়ে বাড়ি ফিরেছি”। দুবরাজপুরের বিধায়ক অনুপ কুমার সাহা বলেন,” দুর্ঘটনাগ্রস্থ ব্যক্তি তথা পরিবার যাতে সমস্ত ধরনের সহায়তা পায় তার জন্য আমরা সহযোগিতা করছি। বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী বলেন,” মৃতদেহ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া থেকে যারা যখন হয়েছেন সকলকেই জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে”।