পুবের কলম প্রতিবেদক: মোবাইলে আসছে বিশেষ ধরনের টেক্স ম্যাসেজ। তাতে লেখা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাঁর গ্যামিং অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা জিতেছেন। টাকার লোভে পাঠানো টেক্স ম্যাসেজ লিঙ্কে ক্লিক করতেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। এমনকী এক্ষেত্রে গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে প্রতারকদের কোনও ওটিপি’রও প্রয়োজন হচ্ছে না। কলকাতবাসীদের প্রতারণার জালে জড়াতে নতুন ধরনের এই ফাঁদ নজরে এসেছে কলকাতা পুলিশের।
সাইবার বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের প্রতারণাকে এপিকে জালিয়াতি নাম দিয়েছেন। প্রতারকদের পাঠানোর লিঙ্কে ক্লিক করলেই গ্রাহকদের অজান্তেই ফোনে ডাউনলোড হচ্ছে এপিকে ফাইল। সেই ফাইলকে হাতিয়ার করে টাকা গায়েব করছে প্রতারকরা। এমনটাই জানিয়েছেন, কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইমের তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
লালবাজারের সাইবারের সেলের এই আধিকারিকেরাই জানিয়েছেন, এপিকে জালিয়াতির ঘটনায় দেখা যাচ্ছে গ্রাহকের অজান্তে ফোনে ওই এপিকে ফাইল ডাউনলোড হয়ে যাওয়ার পর এসএমএস সফটওয়্যাল ফরওয়ার্ড ব্যবহার করছে প্রতারকরা। ফলে গ্রাহকের মোবাইলে কোনও ধরনের এএমস আসছে না। সেই কারণে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হলেও গ্রাহকের কাছে কোনও ধরনের ট্যাক্স ম্যাসেজ যাচ্ছে না। প্রতারকরা এপিকের মাধ্যমেই দূর থেকেই গ্রাহকের মোবাইলের যাবতীয় অ্যাকসেস হাতে তুলে নিচ্ছে।
নামজাদা গ্যামিং ওয়েবসাইটের নাম করেই চলছে এই প্রতারণা। পুলিশ জানিয়েছে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাওয়ের পর সাধারণ মানুষ বুঝতেই পারছেন না, কী ভাবে তাঁরা প্রতারণার শিকার হলেন। কারণ তাঁরা কারও সঙ্গে কোনও ওটিপিশেয়ার করেনি। আগের তুলনায় প্রতারণা ধাঁচেও বেশ কিছু বদল এনেছে প্রতারকরা। এমন গ্রাহকদেরকেই মেসেজ পাঠানো হচ্ছে, যাঁদের মনে কোনও সন্দেহ থাকবে না।
কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রমাইমের আধিকারিকেরা আরও জানিয়েছেন যে, পুলিশের তরফে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁদের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ আসছে। অনেককেই এই ধরনের টেকস ম্যাসেজ পাঠানো হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলাই এখন তাঁদের লক্ষ্য। যদিও সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এপিকের মাধ্যমে যাঁরা প্রতারণা করছে সেই সব প্রতারকদের কাছে পৌঁছনোও কঠিন। তাদের খুঁজে বের করার ক্ষেত্রেও বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। কারণ মোবাইলে পাঠানো লিঙ্ক কয়েক ঘণ্টার জন্যই সক্রিয় থাকে। সেই কারণে পুলিশ লেনদেনের হদিশও পায় না। এক্ষেত্রে তাই সচেতনতাই একমাত্র অবলম্বন। মানুষ যত সতর্ক ও সচেতন হবেন ততই এই ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়ানো যাবে। না হলে টাকাপয়সা সব গায়েব হয়ে যাবে।