পারিজাত মোল্লা: সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চে বনসহায়ক পদে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে শুনানি হবে রেগুলার ডিভিশন বেঞ্চে। রাজ্যের বন সহায়ক পদে দু হাজার জনের একটি প্যানেল বাতিলের নির্দেশ নিয়ে মামলা করার এদিন অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই অনুমতি দিয়েছে বিচারপতি বিবেক চৌধুরী এবং বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চ। তবে দ্রুত শুনানির আর্জি এখনই মঞ্জুর করেনি আদালত। গরমের ছুটির পরে হাইকোর্ট খুললে নির্দিষ্ট বেঞ্চে এই মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
গত সপ্তাহে অবকাশকালীন বেঞ্চে এই মামলা থেকে সরে গিয়েছিল বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। ওই ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, -‘ এই বেঞ্চ মামলাটি নিয়ে কোনও নির্দেশ দেবে না। মামলাকারীরা চাইলে অন্য ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করতে পারেন’। সোমবার সেই পরামর্শ অনুযায়ী নতুন ডিভিশন বেঞ্চে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন জানান বনসহায়ক পদে প্যানেলে থাকা ৫০ জন প্রার্থী।
গত ২০২০ সালে বন সহায়ক পদে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ নিয়ে একরাশ প্রশ্ন উঠে। বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। মামলাকারীদের দাবি, -‘ ভূলত্রুটি সংশোধন না করে চাকরিতে নিয়োগ করেছিল রাজ্য’। ওই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে নিয়োগ প্রক্রিয়ার নানান অসঙ্গতি উঠে আসে।
বিচারপতি নির্দেশ দেন, -‘ নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সব প্রার্থী আবার ইন্টারভিউয়তে অংশ নেবেন। আগামী দু’মাসের মধ্যে পুরনো প্যানেল বাতিল করে নতুন প্যানেল তৈরি করতে হবে। নতুন প্যানেল থেকে যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি পাবেন’। এর পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ জানায়, -‘ নতুন তালিকায় যাঁদের নাম বাদ যাবে, তাঁদের চাকরি বাতিল করতে হবে’। সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নির্দেশের ফলে বর্তমানে দু হাজার জনের চাকরি যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে ।
ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন পুরনো প্যানেলের প্রার্থীদের একাংশ ৫০ জন পদপ্রার্থী ।মামলাকারীদের আইনজীবী জানিয়েছেন , – ‘পুরনো প্যানেলে কোনও অনিয়ম হয়ে থাকলে সেখান থেকে অযোগ্যদের বার করে দেওয়া হোক। তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। যোগ্যদের কেন ইন্টারভিউ দিয়ে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে’। তাই সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। অপরদিকে , সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মতো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। সেই মতো প্রার্থীদের আবেদন নেওয়া শুরু হয়েছে।
অর্থাৎ, নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে রাজ্য।ঠিক এইরকম অবস্থায় ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি বিচারাধীন থাকায় অনেকেই ধন্দে নুতন প্রক্রিয়া নিয়ে। তবে জুন মাসে এই আপিল মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, গতব বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি’তে গিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজীব দল ছাড়তেই বনসহায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে এক জনসভায় প্রশ্ন তোলেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেসময় তিনি জানিয়েছিলেন, -‘ তাঁর কাছে খবর রয়েছে যে, বন সহায়কের প্যানেল তৈরি নিয়ে কারসাজি হয়েছে’।