শুভজিৎ দেবনাথ, বানারহাট: চা- বাগানের পাশে সরকারি জায়গা দখল করে বেআইনি পার্কিং। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটান থেকে পাথর এনে রমরমা ব্যবসা। চলছে তোলাবাজি, অভিযোগ বিরোধীদের। প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা।
পুলিশ প্রশাসনের নাগের ডগায় রিয়াবাড়ি ও নিউ ডুয়ার্স চা বাগানের মাঝামাঝি এলাকায় অবৈধ ভাবে সরকারি জায়গা দখল করে রমরমিয়ে ব্যাবসা চললেও নিরব প্রশাসন! এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং মহামান্য আদালত একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে ,এই সমস্ত বেআইনি কাজ বন্ধের ব্যাপারে। তথাপি সেই নির্দেশিকার অমান্য করেই দেদার চলছে ব্যাবসা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এক কথায় বলতে গেলে মহামান্য আদালতের নির্দেশকেই অমান্য করা হচ্ছে। আদালত অবমাননায় দার করছেন এলাকার যে সমস্ত অসাধু ব্যবসায়ীরা এবং পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয় কেন? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
কারণ আদালতের থেকে যেখানে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, তারপরেই সেই নির্দেশকে আমল দিয়ে সেই বেআইনি কাজ বন্ধ করা জায়নি। এমনকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং বারংবার বেআইনি পার্কিং , বেআইনি ভাবে খনন, বেআইনি ব্যাবসা বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তথাপি তারই দফতরের থাকা পুলিশ আধিকারিকরা মদত দিচ্ছে সেই ধরনের অবৈধ কাজকে? এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের।
সব চাইতে বড় কথা বন্য হাতিদের অন্যতম করিডোর যেখানে কারবালা থেকে রীতিমতো রিয়াবাড়ি হয়ে রেতির জঙ্গল থেকে হাতির দল চা বাগান হয়ে ডায়না তে যায়। সেই জায়গায় পাকা দেওয়াল নির্মাণ করে সরকারি জায়গা ঘিরে দখল করে দেদার ব্যাবসা অভিযোগ উঠছে।
প্রশ্ন উঠছে সেই এলাকার পুলিশ ফাঁড়ির আধিকারিক সেই এলাকার থানার আইসি , ব্লকের বিডিও তারা কেনো কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে প্রশাসনের ভূমিকা। বিভিন্ন ভাবে প্রশ্ন করা হলে প্রশাসনিক কর্তারা বলেন তারা অভিযোগ পাননি। প্রশ্ন উঠছে সরকারি জায়গা দখল, বেআইনি পার্কিং নিয়ে অভিযোগ কে করবে? সরকারের হয়ে।
সেটার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলের নেতাদের বা সাধারণ মানুষের নয়,দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের। অথচ তারাই কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তাই স্বাভাবিক ভাবেই গোটা ঘটনা নিয়ে কিন্তু পুলিশের যোগের বিষয় কিন্তু সামনে আসছে। বহু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে, কিন্তু উত্তর অধরা।
এবিষয়ে রাজ্য বিধানসভার চিফ হুইপ তথা মাদারিহাট বিধানসভার বিধায়ক মনোজ টিজ্ঞা বলেন, বেআইনি কাজ করার জন্যই এই সরকার। মুখ্যমন্ত্রী শুধু বলেন ,ওটাকে বাস্তবায়িত করার জন্যে বলেন না। ওটা তার দলের নেতাদের অর্থ উপার্জনের রাস্তা করে দেয়। আমাদের কাছে অভিযোগ আছে ওখানে পুলিশের মদত রয়েছে,সিভিক ভলেন্টিয়ার কে পাহারা রাখা হয় বেআইনি পার্কিং এর নাকা চেকপোস্টে যেখানে তৃণমূলের দলের কর্মীরা থাকেন। প্রশ্ন হচ্ছে কি করে ভুটান থেকে পাথর এনে ভারতীয় সীমানায় এবং তারপর সরকারি জায়গায় মজুত করে ব্যাবসা চলছে। বি এল আর ওর ভূমিকা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
বিরোধীদের অভিযোগ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক মোটা টাকা কমিশন পান। তাই সেখানে সরকারি জায়গা দখল হয়ে এই বেআইনি ব্যবসা চললেও ঘুরেও তাকায় না তারা। সমস্তটাই জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানেন অথচ কেউ পদক্ষেপ নেননা। বিরোধীদের আরো অভিযোগ ,সামনে যেহুতু পঞ্চায়েত নির্বাচন তাই মোটা টাকা তুলছে সেখান থেকে শাসকদল।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর দাবি, পুলিশ ও তৃণমূল নেতারা সেই জায়গা থেকে কাটমানি নিচ্ছে তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মানছে না কেউ।
যদিও বিজেপির অভিযোগকে মানতে নারাজ তৃণমূল। এবিষয়ে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মহুয়া গোপ কে টেলিফোন করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা। দল ধরনের কাজকে বরদাস্ত করে না। বানারহাট থানার পুলিশ এবিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।