পারিজাত মোল্লা , কলকাতাঃ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চে বেসরকারি স্কুল ফি সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলে। রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলো ইচ্ছেমতো ফি বৃদ্ধি করছে, যা নিয়ে অভিভাবকদের একাংশের বিক্ষোভ রয়েছে । এদিন এই মামলায় এবার কড়া পর্যবেক্ষণ জানালেন অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসু।
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী এজলাসে জানান -‘ অনেক স্কুল ফি বাড়ানোর আগে সরকারি অনুমতি নেয় না’। রাজ্যের আইনজীবীর এইই দাবি শুনে তার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসুর জানান , -‘ স্কুল মিষ্টির দোকান নয় যে ইচ্ছামত দাম নির্ধারণ করা হবে’।
মহানগরের দু’তিনটি নাম করা স্কুলের অস্বভাবিক ফি বৃদ্ধি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। সেই মামলার এদিনকার শুনানিতেই এই তাত্পর্যপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ ।
ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে , -‘ কী নিয়মে ফি বাড়াতে পারে বেসরকারি স্কুল? তা আগামী শুনানিতে জানাতে হবে সব পক্ষকে’। এক্ষেত্রে রাজ্যের মন্তব্য শুনে যে ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিচারপতি বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল । এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ৫ জুন ।
এদিনএই মামলার শুনানিতে বেশ কয়েকটি স্কুলের নাম উল্লেখ করা হয় যাদের বিরুদ্ধে মূলত অভিযোগ। মামলাকারীদের দাবি, -‘ ওইসব স্কুলে গত বছর ও এবছর ফি বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ’।
সেইসাথে রাজ্যের দাবি, -‘ বেসরকারি স্কুলের ফির বৃদ্ধির জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হয়, কিন্তু তারা নেয় না, তাই রাজ্যও ফি বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে পারে না’। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘স্কুল তো মিষ্টির দোকান নয়, ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করা হবে!’প্রসঙ্গত, কলকাতার দুই – তিনটি টি নামকরা বেসরকারি স্কুলে অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধির ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। অভিভাবকদের অভিযোগ, -‘ ২২ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বার্ষিক ফি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কোনও স্কুলে আবার সেটা ১০০ শতাংশও করা হয়েছে’।জানা গেছে, যে স্কুলগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সেগুলি সবকটাই সিবিএসই বোর্ডের।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি এদিন বোর্ডের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, -‘ ফি নিয়ন্ত্রণে বোর্ডের ভূমিকা কী’? বোর্ডের তরফে জানানো হয়, -‘ এই ব্যাপারে রাজ্য যা ঠিক করবে তাই হবে’।রাজ্যের আইনজীবী এদিনের শুনানিতে জানান,-‘ অনেক স্কুল ফি বাড়ানোর আগে সরকারের অনুমতি নেয় না’।তারপরই বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান , -‘ স্কুল কোনও মিষ্টির দোকান নয় যে, ইচ্ছে মতো দাম ঠিক করবে’। কী নিয়মে ফি বৃদ্ধি করা হচ্ছে, সে ব্যাপারে সবপক্ষের বক্তব্য চেয়েছেন বিচারপতি বসু। আগামী ৫ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। সেদিনই সবপক্ষকে নিজেদের বক্তব্য জানাতে হবে কলকাতা হাইকোর্টকে বলে জানা গেছে ।