পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্যে পুলিশ নিয়োগ নিয়ে বহুদিন ধরেই অশান্তি ঘনিয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে। অভিযোগ, বহু নিয়োগ আটকে রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। এবার সেই সব নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনে ৬ মাসের ট্রেনিং ৭ দিনে দিতে হবে। পুলিশের সব নিয়োগ ৩ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন।
এদিন উৎ্কর্ষ বাংলা সম্পর্কিত পর্যালোচনা সভায় এই প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি একটা জিনিস বলব, আমরা আগে ৬ মাস ট্রেনিং দিতাম। আমাদের এখানে হাজার হাজার নিয়োগের জন্য পড়ে রয়েছে। কিন্তু একটা ক্যাজুয়ালনেস চলে এসেছে। যে নিয়োগ দিচ্ছে, তার কিছু যেন যায় আসে না। কিন্তু যে ছেলেমেয়েগুলো পরীক্ষা দেয় চাকরির জন্য, তারাও তো আশায় থাকে চাকরিটা হবে বলে।’
এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, ‘আমি সরাসরি নির্দেশ দিচ্ছি, ৩ মাসের মধ্যে পুলিশের সব নিয়োগ শেষ করতে হবে । ট্রেনিং হিসেবে আগে যেটা ৬ মাসে দিতে, সেটা ৭ দিনে দাও। এক একটা পুলিশ স্টেশনে লোক পাঠাও।’
প্রসঙ্গত, রাজ্যজুড়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষায় সমস্ত রেজাল্ট বের করার দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, মিথ্যা রিজার্ভেশন পলিসির নাম করে পুলিশ রিত্রু«টমেন্ট বোর্ড তাঁদের সমস্ত নিয়োগ পরীক্ষার রেজাল্ট আটকে রেখেছে। রিক্রুটমেন্ট বোর্ড আন্দোলনকারীদের জানিয়েছে আদালত নাকি তাদের ক্লিয়ারেন্স দেয়নি।
এই পরিস্থিতিতে চাকরিপ্রার্থীদের প্রশ্ন, ‘পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত রিক্রুটমেন্ট যখন নিউ রিজার্ভেশন পলিসির আন্ডারে হচ্ছে? তাহলে আমাদেরটা কেন আটকে থাকবে? তারও আগে, গত বছরের মে মাসে কলকাতা পুলিশের এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘আরও বেশি করে পুলিশকে লোক নিতে হবে, নিয়ে আসতে হবে। আমাদের সময়ে আমরা অনেক রিক্রুটমেন্ট পুলিশে করেছি। এবং আরও যেগুলো প্রসেসে আছে। এরপরেই মমতা বলেন, ‘আমি বারবার বলি, এর মধ্যে আমরা কোনও ইন্টারফেয়ার করি না। করি না যখন বলছি, করি না। স্ট্রেট পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে, উচ্চতা-টুচ্চতা মেপে, পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড করে। শূন্যপদ যেগুলো রয়েছে সেগুলো পূরণ করতে হবে।’সে সময়ে অনেকেরই কৌতূহল ঘনিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী কী বোঝাতে চাইলে?
সম্ভবত, অন্যান্য দফতরে অভিযোগ উঠলেও তাঁর হাতে থাকা পুলিশ দফতরে নিয়োগ নিয়ে কোনও অভিযোগ কেউ তুলতে পারবেন না। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, বছর ঘুরলেও নিয়োগ হয়নি। বরং বেড়েছে অশান্তি। তাই হয়তো একরকম বাধ্য হয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে ‘ইন্টারফেয়ার’ করতেই হল পুলিশ নিয়োগ নিয়ে।