পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় ‘মোচা’র গতিপথ কোনদিকে সেই নিয়ে ক্রমশই কৌতূহল বাড়ছে। বুধবার সকালেই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ আরও পশ্চিমে সরে গিয়ে পরিণত হয়েছে অতি গভীর নিম্নচাপে। আবহবিদরা জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যেই সেই অতি গভীর নিম্নচাপ থেকে জন্ম নেবে ঘূর্ণিঝড় মোকা। অতি গভীর নিম্নচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে ১৪৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে রয়েছে। মায়ানমারের সিতওয়ে থেকে দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে ১৩৬০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে এটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়েছে. ঘূর্ণিঝড়ের নাম মোচা। রাতের মধ্যেই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে মোচা। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যারা সমুদ্রে রয়েছেন, তাদের আজ, বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে উপকূলে ফিরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে কলকাতায় তাপপ্রবাহ চলছে। গরম ও অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জলীয় বাষ্প কমে শুষ্ক আবহাওয়া।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি আজ ঘূর্ণিঝড় মোচাতে পরিণত হয়েছে এবং ১২ মে বিকেলের মধ্যে একটি অত্যন্ত প্রবল ঝড়ে পরিণত হবে। এটি গত ছয় ঘণ্টায় ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার বেগে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয় এবং ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। মোচার মোকাবিলায় ৬টি দলে বিপর্যয় মোকাবিলা টিম মোতায়েন করা হয়েছে। তিনটি টিম রামনগর ১ ব্লকে ও রামনগর ২ ব্লকে বাকি তিনটি টিম দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা, কুলতলি সহ কাকদ্বীপে মোতায়েন করা হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনায় হিঙ্গলগঞ্জ ও সন্দেশখালিতে দুটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ সহ ওড়িশা উপকূলে হাই অ্যার্লাট জারি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনী সহ কোস্ট গার্ড বাহিনী।
ঘূর্ণিঝড় মোচা দিক পরিবর্তন করে বাংলাদেশ এবং মায়ানমার উপকূলের দিকে যাবে। ঘূর্ণিঝড়ের পরোক্ষ প্রভাব পড়বে বাংলায়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকা রবিবার দুপুরে বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মায়ানমারের কিয়াপ্পু-এর মাঝে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই এটি আছড়ে পড়বে স্থলভাগে। শনিবার থেকে উপকূলে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি শুরু হবে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলের অংশে বৃষ্টি হবে।রবিবার বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়বে।
ল্যান্ডফলের সময় মোচার সর্বোচ্চ গতিপথ হতে পারে ১৩০ কিলোমিটার। তবে বাংলায় এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কতটা পড়বে, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু বাংলা সরকারের পক্ষ থেকে মোচা মোকাবিলায় সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হতে পারে। প্রশাসনকে সব রকম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।