পারিজাত মোল্লা: বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে বড়সড় আইনি স্বস্তি পেলেন নোবেল অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। বীরভূম জেলা আদালতে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অমর্ত্য সেনের জমির বিষয়ে কোন পদক্ষেপ করতে পারবেন না বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এদিন এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ১০ মে বীরভূম জেলা আদালতে এই সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিভাসরঞ্জন দে-র নির্দেশ, -‘জমি খালি করার জন্য এস্টেট অফিসারের তরফে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে’। অর্থাৎ অমর্ত্য সেনের জমি খালি করার নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট । এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি সিউড়ি আদালতে ১০ মে রয়েছে ।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের জমি নিয়ে আপাতত কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। গত ৬ মে বিশ্বভারতীর ইস্যু করা নোটিশে বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদ জমি খালি করার নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ১৫ মে জেলা আদালতে এই মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল। সেই শুনানি আগামী বুধবার অর্থাৎ ১০ মে করবে জেলা আদালত।
সিউড়ি আদালত অমর্ত্য সেনের জমি খালি করার নির্দেশের উপর যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল, সেটা আপাতত এই মামলার নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বজায় থাকবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি বিভাসরঞ্জন দে।
যদিও বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আইনজীবী আদালত কে বলেন, -‘এই আদালতের এক্তিয়ার নেই মামলা শোনার। জমির উপর স্ট্যাটাসকো নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। এর অর্থ তাঁরা সুরক্ষিত। এখানে আবেদন করার এক্তিয়ার নেই মামলাকারীর ‘। হাইকোর্ট এই মামলা শুনতে পারে না বলে বিশ্বভারতীর আইনজীবী দাবি তুলেন । অমর্ত্য সেনের তরফে আইনজীবী বলেন, আগামী ১৫ মে ( পরবর্তীতে ১০ মে) শুনানি থাকলেও ৬মে ওই জমি খালি করার নোটিশ দেওয়া হয়েছে বিশ্বভারতীর তরফে।
বিচারপতি দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী বুধবার (১০ মে) এই মামলার শুনানি করবে বীরভূম জেলা বিচারক। বিশ্বভারতীর জমি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সিউড়ি আদালতে আগেই মামলা করেছিলেন নোবেলজয়ী।
সেখানে ১৫ মে মামলার শুনানি ছিল। বিশ্বভারতীর আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার শুনানি এগিয়ে ১০মে করল কলকাতা হাইকোর্ট। তাই ৬ মে জমি খালি করার নোটিশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করলেন বিচারপতি বিভাসরঞ্জন দে।
জানা গেছে, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৯৯ বছরের জন্য ১.৩৮ একর জমি লিজে দিয়েছিলেন। লিজে জমি পেয়েছিলেন নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের বাবা আশুতোষ সেন । তাঁর বাবাই প্রতীচী বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। এরপর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অমর্ত্য সেনের বাড়ির একাংশ জায়গা নিজেদের দাবি রেখে উচ্ছেদ নোটিশ থেকে আদালতমুখী হয়।