পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ২০১৪-র পর থেকে দেশে সবথেকে বেশি বুলডোজার চলেছে মাদ্রাসা আর গির্জায়। সবথেকে বেশি কোণঠাসা হয়েছে মুসলমান, খ্রিস্টান, দলিত ও আদিবাসীরা। যা কিছু বিজেপি সরকারের অপছন্দ, তার উপরেই চলেছে বুলডোজার। বুলডোজার যেন ‘প্রতিশোধ’-র প্রতিশব্দ। সম্প্রতি বিজেপি শাসিত মনিপুরে আদিবাসীদের গির্জায় বুলডোজার চালায় প্রশাসন।
আদিবাসী ফোরামের অভিযোগ, বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকার সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও জলাভূমির সমীক্ষা করছে তাদেরকে কোণঠাসা করার জন্য। এছাড়া তাদের গির্জা ভেঙেছে রাজ্য সরকার। এই ঘটনায় ধিক ধিক করে ক্ষোভের আগুন জ্বলছিল সেখানকার আদিবাসীদের মধ্যে। শুক্রবার সেই আগুনই দাউদাউ করে জ্বলে উঠল মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে।
শুক্রবার দুপুরে মণিপুরের চূড়াচন্দপুর জেলায় একটি জিম ও ক্রীড়া কেন্দ্রের উদ্বোধন করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের। সেই অনুষ্ঠানমঞ্চের চেয়ার, সাজসজ্জা পুড়িয়ে ছাই করে দেয় সেখানকার ট্রাইবাল লিডার্স ফোরাম এর সদস্যরা। আগুন জ্বালানোর ঘটনার পর গোটা জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। যাতে ক্ষোভের আগুনে নতুন করে হাওয়া না লাগে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
আদিবাসীদের প্রতি সেখানকার বিজেপি সরকারের অন্যায় নীতির প্রতিবাদেই এমন কাজ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ফোরামের পক্ষ থেকে। আদিবাসী ফোরামের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অসহযোগ আন্দোলন চলবে। ভবিষ্যতেও সরকারের সমস্ত অনুষ্ঠান বানচাল করে দেবে তারা। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে টানা ৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দেয় ওই সংগঠনটি। ফোরামের এই আন্দোলনে পাশে দাঁড়িয়েছে, কুকি স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন। তাদের অভিযোগ, আদিবাসীদের প্রতি বিজেপি সরকার বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে।
এদিন ক্ষোভের আগুনে অন্তত কয়েকশো চেয়ার পুড়ে ছাই হয়। তড়িঘড়ি পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হলেও সেখানে পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত। উত্তেজনা রয়েছে গোটা এলাকায়। এই মাসের শুরুতে তিনটি গির্জা ভেঙে দেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছিল সেখানকার আদিবাসীরা। বিজেপি শাসিত মণিপুর প্রশাসনের মতে, অবৈধভাবে ওই গির্জাগুলি নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে কাকতালীয়ভাবে বিজেপি সরকারের আমলেই দেশে হাজার হাজার অবৈধ মাদ্রাসা ও গির্জার খোঁজ মিলেছে। কোথাও মসজিদের নিচে মন্দিরের লুকিয়ে থাকার তত্ব তুলে ধরা হয়েছে।