শুভজিৎ দেবনাথ, ডুয়ার্স: নিয়োগ দুর্নীতির সমস্ত মামলা কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ডুয়ার্স থেকে সাধুবাদ জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ধূপগুড়ির মাজার শরীফে তিনি চাদর চড়িয়ে প্রার্থনা করে বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ সেটা আমাদের শিরোধার্য। আমরা তাকে সম্মান জানাই।
শুক্রবার আলিপুরদুয়ারের পর শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলার নব জোয়ার কর্মসূচিতে আসেন অভিষেক। এদিন সকাল আনুমানিক সাড়ে এগারটা নাগাদ গয়েরকাটায় এসে পৌঁছয় তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কনভয়। দলীয় নেতাকে স্বাগত জানাতে এদিন সকাল থেকেই ভিড় জমায় কর্মী সমর্থকরা। মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয় পুরো শহর। খাদা পড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটা স্বাগত জানান জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বাজনা বাজিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ধামসা বাদলের সঙ্গে নিত্য করে স্বাগত জানায় রাভা ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। গয়েরকাটায় মঞ্চ বাধানো হলেও সেই মঞ্চের কাছে কেউ ওঠেনি অভিষেক। এলাকার লোকজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সোজা বেরিয়ে যায় ধূপগুড়ির সোনাখালী মাজার শরীরে। সেখানে চাদর চড়িয়ে প্রার্থনা করেন।
এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপির ডাকা এদিকের বনধ পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এরপর নিয়োগ দুর্নীতির সমস্ত মামলা কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন ,দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ সেটা আমাদের শিরোধার্য। আমরা তাকে সম্মান জানাই। তদন্ত সঠিক ভাবে হোক। বিচার ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে ২২ মাসে ২৩ টি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এই মাসে দিয়েছে তিনটি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আমি সেটা মার্চ মাসের আগে বলেছিলাম।
এক দুজন বিচারপতি এই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আর কেউ দেয়নি। এই বক্তব্য রেখে বিচারপতির ভূমিকা নিয়েও যেনো রীতিমত প্রশ্ন তুলেদেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বিষয়গুলি নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে নিয়ে যখন আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছি সর্বোচ্চ আদালত সেগুলো খারিজ করে দিচ্ছে। বিচারব্যবস্থার দায়িত্ব রয়েছে না আমার অনুরোধ মানুষ যাতে ন্যায়বিচার পায় একাজ সুনিশ্চিত করা। তৃণমূলের কেউ যদি দোষী প্রমাণিত হয় , তাহলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। ভারতবর্ষের ইতিহাসে যা নজির হয়ে থাকবে। তবে সঠিক ভাবে বিচার সবাই পাক এদিন ধূপগুড়ির মাটি থেকে তিনি বলেন।
পাশাপাশি কোচবিহারের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তিনি বলেন বিজেপির কালচার এটা। নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করতে গিয়ে মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। এরপর সেখানে থেকে সোজা চলে যায় বানারহাটের হলদিবাড়ি গিয়ে বিরসা মুন্ডার মূর্তিতে মাল্য দান করেন।
এদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর সফর ঘরে বেপক উৎসাহী ছিলেন দলীয় কর্মীরা। কিন্তু সেই কর্মীদের মুখেই যেনো হতাশার ছাপ। কারণ কোথাও একটি শব্দও ব্যাবহার করেনি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে। এমনকি দলীয় কর্মীরা সঠিক ভাবে কথাও বলতে পারেনি বলেই অভিযোগ।
মেটিলিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছানোর আগেই রীতিমত উত্তেজনা তৈরি হয় হয় তৃণমূলের দলীয়কর্মীদের মধ্যে। সূত্রের খবর, ভিআইপি পাসের ক্ষেত্রে সেখানে নাম না থানায় কিষান ক্ষেতমজুরের এক ব্লক সভাপতির নাম না থানায় রীতিমত বিক্ষোভ দেখান। যেখানে তৃণমূলের জেলা কমিটির চেয়ারম্যান খঘেশ্বর রায় তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলে তার সঙ্গে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। রীতিমত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি অভিষেক ঢোকার মুখেই।