দেবশ্রী মজুমদার, রামপুরহাট, নৃশংস ভাবে ভাইকে খুনের দায়ে দাদাকে যাবজ্জীবন সাজা শোনাল রামপুরহাট অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত। ঘটনাটি ঘটে ২০১৯ সালের ২ রা মার্চ নলহাটি থানার অন্তর্গত নলহাটি পুরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের মণ্ডল পাড়ায়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক অশান্তির কারণে প্রায় দু’বছর আগে একদিন ভোরের দিকে সেজো ভাই ইনজামাম বাসির তার ছোট ভাই রোহন বাসির (১৯)কে নৃশংসভাবে তলোয়ার দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে তার হাতে কব্জি কেটে দেয় এবং ধড় থেকে তার মুণ্ড আলাদা করে দেয়। বাধা দিতে গেলে বড় ভাই ওয়াসিম বাসিরকে সেই তলোয়ার দিতে খুন করার চেষ্টা করে। এমনকি মা মাধুরি বিবিকেও আঘাত করার চেষ্টা করে। মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার দিন নলহাটি থানার পুলিশ আসামীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হয়।
সরকারী আইনজীবী উৎপল মুখোপাধ্যায় জানান, বুধবার আসামী ইনজামাম বাসিরকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। বৃহস্পতিবার রামপুরহাট অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য অভিযুক্ত ইনজামাম বাসিরকে তার ছোট ভাই কে নৃশংসভাবে খুনের অপরাধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাবাস, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ৩০৭ ধারায় বড় ভাই ওয়াসিম বাসিরকে খুনের চেষ্টা করার জন্য ১০ বছরের সশ্রম কারাবাস ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৩২৪ ধারায় ইচ্ছাকৃতভাবে ধারালো অস্ত্রে আঘাত করার জন্য ২ বছরের কারাবাস ও ৩ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন। সমস্ত সাজায় এক সাথে চলবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ইনজামাম বাসির এবং নিহত রোহন বাসির দুই ভাই একঘরে একসাথে রাত্রে শুতেন। আর তার পাশের ঘরে থাকতেন বড় ভাই ওয়াসিম বাসির। ওই ঘটনার দিন ভোরের দিকে পাশের ঘরে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেন তাঁর সেজো ভাই ইনজামাম বাসির খোলা তলোয়ার নিয়ে তার ছোট ভাইয়ের দেহ থেকে মুণ্ড আলাদা করে দিয়েছেন। তাকে আঁটকাতে গেলে উন্মত্ত ইনজামাম তাকেও কব্জিতে আঘাত করে। লোকজন জড়ো হতে থাকলে, অভিযুক্ত পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়। তার তলোয়ার একটি বাঁশ ঝাড়ে লুকিয়ে সোজা নলহাটি থানায় আত্মসমর্পণ করে নিজের দোষ কবুল করে আসামী। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং তারপর থেকে আসামী জেল হেফাজতে ছিল।