শুভায়ুর রহমান: সুদূর ডেনমার্ক থেকে প্রথমে খবরটি জানিয়ে বাড়িতে ফোনটি আসে। তারপর টিভি খুলে দেখেন ঘটনাটি সত্যি। বুকটা কেঁপে উঠেছিল বলছেন বাবা। তবে কোনও মায়ের কোল যে খালি হয়নি এটাই আল্লাহর অশেষ রহমত বলছেন পরিজন। সিনেমার কায়দা হলেও রিল লাইফ নয়, রিয়েল লাইফের দাবাং পুলিশ অফিসার মালদার ডিএসপি (ডি অ্যাণ্ড টি) আজহারউদ্দিন খান।
বুধবার পুরাতন মালদার মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাইস্কুলে বন্দুকবাজ দেব বল্লভের হাত থেকে ৭১ পড়ুয়ার প্রাণ বাঁচিয়ে রাজ্য পুলিশ তো বটেই গর্বিত করেছেন আজহারউদ্দিন তাঁর পরিবারকেও।
পুলিশ অফিসারের দাদা পেশায় ইঞ্জিনিয়ার আজিম খান জানান, প্রথম ফোনটি ডেনমার্ক থেকে একজন বন্ধু করেছিলেন বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ। তারপর মালদা থেকে ভাইয়ের স্ত্রী জানান। টিভি খুলে দেখি সেই ঘটনা।’
বাবা-মায়ের কি মনের কি অবস্থা ছিল? আজিম খান বলেন, বাবা-মা খুবই চিন্তায় পড়েছিলেন। আমাদের মতো স্কুলের অভিভাবকেরাও তো চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। অনেকগুলি নিরীহ প্রাণ বেঁচেছে এটা আল্লাহর রহমত। ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল। সে জানায়, ওই সময় মাথায় অন্য কিছুই আসেনি। কর্তব্য মনে করেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
পুলিশ অফিসার আজহারউদ্দিন খানের আদি বাড়ি হাওড়ার উলুবেড়িয়ার মুসাপুর গ্রামে। বর্তমানে তাঁরা পার্কসার্কাস এলাকায় থাকেন। তবে মুসাপুর গ্রামে যাতায়াত নিয়মিত রয়েছে বলে জানান, আজহারউদ্দিনের দাদা আজিম খান।
তিনি জানান, আমার বা বাবা-মায়ের ইচ্ছে ছিল ভাই ডব্লিউবিএসসি অফিসার হোক। সেই আশা পূরণ করেছে। পাশাপাশি ভাই অনেক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
বাবা আবুল আলি খান ও মা জাহেদা বেগমের দুই সন্তান। তাঁর বাবা আবুল আলি খান বলেন, প্রথম যখন শুনেছিলাম মনের মধ্যে ধাক্কা লেগেছিল। এইসব ঘটনা থেকে অঘটন ঘটতেও পারত তাই চিন্তিত ছিলাম। তবে ছেলে যে কাজটা করেছে খুবই ভাল। সবই আল্লাহর অশেষ রহমত যে কোনও শিশুর কিছু হয়নি। ২০১৩ ডব্লিউবিসিএস ব্যাচের পুলিশ অফিসার এখন সংবাদ শিরোনামে। প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। খুশি পরিবারও।