মাওলানা আবদুল মান্নান: হিজরি দ্বিতীয় সনে রমযান মাসের রোযা ও সদাকাতুল যাকাত বা সদাকাতুল ফিতর বা ফিতরাকে ফরয ঘোষণা করা হয়। ফিতর বা ইফতার শব্দের অর্থ হল কোনও কিছুকে ভাঙা বা শেষ করা। প্রতিদিন রোযা রেখে সূর্যাস্তের শেষে কিছু খেয়ে রোযা ভাঙা হয়, এজন্য তাকে ইফতার বলা হয়। অনুরূপভাবে এক মাস রোযা শেষ করে রোযার যাকাত দেওয়া হয় বলে তাকে সদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা বলা হয়।
ঈদ-উল-ফিতরের দুই দিন পূর্ব থেকে ফিতরা প্রদান করা বৈধ বা জায়েয। ফিতরা প্রদানের জন্য ‘নিসাব’ অর্থাৎ যাকাত প্রদানের যোগ্য হওয়া শর্ত নয়; বরং প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী, ছোট-বড়, ধনী-গরিব, যাদের গৃহে একদিনের আহার্য অপেক্ষা বেশি ফিতরা প্রদানের যোগ্য দ্রব্যাদি থাকে, তাদের প্রতি ফিতরা ফরয। (মুয়াত্তা ইবনে মালেক)
হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন ; ‘নবী করীম সা. সদাকাতুল ফিতর, রোযাদারকে রোযাবস্থায় কৃত ভুল, ত্রুটি-বিচ্যুতি ও অশ্লীল কথাবার্তা থেকে পবিত্র করার এবং দরিদ্র, গরিব মানুষদের খাদ্যের ব্যবস্থার জন্য ফরয করেছেন।’
কী কী বস্তু দ্বারা কী পরিমাণ ফিতরা আদায় করা যায়?
এই সম্পর্কে হযরত আবু সায়ীদ খুদরী রা. বলেন, ‘আমরা নবী করীম সা.-এর সময়ে সদাকাতুল ফিতর এক ‘সা’ (১ কেজি ৬৫০ গ্রাম) খাদ্যoব্য (যেমন এক সা যব বা এক সা খেজুর বা এক সা কিস্মিস্) প্রদান করতাম। (বুখারি, মুসলিম)
এই সকল খাদ্য দ্রব্যের বাজার মূল্য ওই সময়ে প্রায় একই ছিল। বর্তমানে গমের বাজার মূল্য সবথেকে কম। অথচ ধনী- গরিব নির্বিশেষে সকলেই গমের মূল্য হিসাবে ফিতরা প্রদান করেন। আল্লাহ্ যাঁদের ধনসম্পদ দান করেছেন, তাঁরা সম্পদের কৃতজ্ঞতা বা শুকরিয়া আদায়ের জন্য পনির, খেজুর, কিসমিসের মূল্যে ফিতরা প্রদান করলে বর্তমান সংকটকালে অভাবি মানুষগুলো আরও বেশি উপকৃত হবে। আল্লাহ্ আমাদের তাওফিক দান করুন, আমীন!