পারিজাত মোল্লাঃ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে উঠে নদিয়ার তেহট্ট এলাকার বিধায়কের বিরুদ্ধে সিবিআই চেয়ে মামলাটি। দমকলে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে। এই মামলার তদন্ত করতে অসুবিধা নেই বলে এদিন কলকাতা হাইকোর্টে জানানো হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে।
নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে ১৬ কোটি টাকা চাকরি দেওয়ার নাম করে তোলার অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগ নিয়ে আদালত নির্দেশ দিলে সিবিআইয়ের তদন্ত করতে কোনও অসুবিধা নেই। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে এমনটাই জানাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
অন্যদিকে এই বিষয়ে রাজ্য তাদের বক্তব্য জানাতে দু’দিন সময় চেয়েছে এদিন । আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার ফের শুনানি হবে বলে জানা গেছে ।
এদিন মামলাকারী আইনজীবী তরুণজ্যোতি তেওয়ারি বলেন, ‘তাপস সাহা, প্রবীর কয়াল, শ্যামল কয়াল সুনীল মণ্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তাঁরা ১৬ কোটি টাকা বিভিন্ন সময়ে নিয়েছেন দমকলে চাকরি দেওয়ার নাম করে। রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখা তদন্ত করছিল। নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়াও চলছে। কিন্তু তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ও অন্যতম অভিযুক্ত তাপস সাহার বিরুদ্ধে যথাসময়ের মধ্যে চার্জশিট জমা না দেওয়ায় বিষয়ক তাপস সাহা নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেয়ে যান। পাশাপাশি তিনজনকে গ্রেফতার করা হলেও তারাও নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান।”
এদিন মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বেঞ্চে ।
বিচারপতি মান্থার এদিন এজলাসে জানান, ‘আদালত তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে ভাবিত নয়। আদালত একটা সত্য উদঘাটনের জন্য তথ্য চাইছে। আদতে এই মামলা রাজ্যের হাতে থাকবে নাকি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিতে হবে, সেই বিচার করবে আদালত। কারণ, মামলাকারী সিবিআই ও ইডি-র তদন্ত দাবি করেছেন। আর প্রশ্নটা সরকারি চাকরি বিক্রির ।”রাজ্যের প্রভাবশালী বিধায়ক তাপস সাহা। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে রাজ্য তাঁর বক্তব্য জানাবে। কেন্দ্রের বক্তব্য, এই ধরনের চাকরি বিক্রির অভিযোগে এখন একাধিক মামলার তদন্ত কেন্দ্রীয় এজেন্সি করছে।
তাই এই ক্ষেত্রেও তদন্তের দায়িত্ব নিতে আপত্তি নেই তাদের। সম্প্রতি একটি অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে এনে তরুণজ্যোতি দাবি করেন যে, ‘ অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন সরকারি দফতরে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা’ ।
মূলত দমকলে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি। তরুণজ্যোতির দাবি, দুর্নীতিদমন শাখা তদন্তের ভার নিলেও তারা কিছুই করেনি। অভিযোগকারীকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মামলাকারীর আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি জানান, “২০২০ সালের অডিও ক্লিপ। সেখানে মিডলম্যানদের উদ্দেশ্যে চাকরি সুনিশ্চিতকরণের বার্তা দেওয়া হয়েছে।” মঙ্গলবার এজলাসে আসেন মামলায় অভিযুক্ত বিধায়ক তাপস সাহা। তাপস সাহার দাবি, “ভাইরাল অডিও ক্লিপে ওটা আমার গলা নয়। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ১৬ কোটি টাকা নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা। রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখার তদন্তে আস্থা আছে। সিবিআই তদন্তে কেন মুখোমুখি হব”? এখন দেখার আগামী বৃহস্পতিবার রাজ্যের আইনজীবী, অভিযুক্ত বিধায়কের আইনজীবী সওয়াল-জবাবে কি কি তথ্য তুলে ধরেন আদালতের কাছে?