পারিজাত মোল্লাঃ সোমবার দুপুরে কলকাতার আলিপুর আদালতে সিবিআই এজলাসে উঠে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা।ইতিপূর্বে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাধিকবার আদালতের ভর্ত্সনার মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সোমবার শান্তিপ্রসাদ সিনহার একটি মামলায় ফের সিবিআইকে ভৎসনার মুখে পড়তে হল। ওএমআর শিট বিকৃতির মূল অভিযুক্ত নীলাদ্রি বিশ্বাসের মামলাতেই এসপি সিনহার জেল হেফাজত চায় সিবিআই।সেই প্রসঙ্গেই আদালত জানায়, ‘আপনারা এই মামলায় এসপি সিনহার জামিনের বিরোধিতা করছেন কেন? এই মামলায় জামিন পেলেও তো এসপি সিনহা অন্য মামলায় জেল হেফাজতেই থাকবেন!’বিচারকের এই প্রশ্নের জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘এসপি সিনহাকে জামিন দিলে ভুল বার্তা যাবে। তদন্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে। এসপি সিনহা বেশ প্রভাবশালী।’সিবিআইয়ের এই যুক্তি শুনেই বিচারক বলেন, ‘আপনারা এই ভাঙা রেকর্ড কেন বাজাচ্ছেন? সব ক্ষেত্রেই এই একই কথা বলে চলেছেন। কাজের কাজ তো কিছু হচ্ছে না।’এদিন সিবিআইয়ের তরফে এও দাবি করা হয়, ‘নীলাদ্রি বিশ্বাস সাক্ষীদের ভয় দেখিয়েছেন।’ তা শুনে আদালত প্রশ্ন তোলে, তার জন্য কি পৃথক এফআইআর সিবিআই করেছে? না করলে কেন করেনি?সিবিআইয়ের দাবি ,-‘ নীলাদ্রিকে দিয়েই গোটাটা করিয়েছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য এবং এসপি সিনহারা। ভিন রাজ্যের সংস্থার এই বাঙালি আধিকারিকই হয়ে উঠেছিলেন এসএসসির উপদেষ্ট কমিটির অন্যতম অস্ত্র। একদিকে সার্ভার দখল অন্যদিকে ওএমআর শিট বিকৃতি—দু’দিক দিয়ে জালিয়াতি হয়েছিল’। সোমবার আলিপুর আদালতের বিচারক সিবিআইয়ের তদন্ত করার ক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। সিবিআইকে তিনি সোজাসুজিই বলে দেন, ”তদন্ত না করতে পারলে বলে দিন…।”সোমবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে শুনানি ছিল এসএসসির উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিনহা এবং ওএমআর শিট মূল্যায়নকারী সংস্থা নাইসার প্রধান নীলাদ্রি দাসের। সেখানেই শান্তিপ্রসাদ এবং নীলাদ্রিকে নতুন করে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে সিবিআই। এমনকি, তাঁদের চাওয়া জামিনের আর্জির বিরোধিতাও করে তারা। এ প্রসঙ্গেই সিবিআইয়ের কাছে আদালত জানতে চেয়েছিল, কেন হেফাজতে চাওয়া হচ্ছে শান্তিপ্রসাদ, নীলাদ্রিদের? নতুন করে হেফাজতে চাওয়ার কারণটা ঠিক কী? বিচারকের এই প্রশ্নের জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী জবাব শুনেই ক্ষুব্ধ হয় আদালত। বিচারক কে আইনজীবী বলছিলেন, ”অনেক নতুন তথ্য এবং প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। বড় ষড়যন্ত্রের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তা ছাড়া ওঁরা সহযোগিতাও করছেন না…।” তারই জবাবে বিচারক পাল্টা প্রশ্ন করেন, ”সহযোগিতা করছে না বলছেন, এদিকে অনেক তথ্য পাচ্ছেন কী করে? আপনারা জ্যোতিষী নাকি?” এইরকম নানান মন্তব্য করতে দেখা যায় বিচারককে।