আসিফ রেজা আনসারী: দেশের প্রথম মেট্রো পরিষেবা চালু হয়েছিল শহর কলকাতাতেই। তারপর অবশ্য অনেক শহরেই এই পরিষেবা শুরু হয়েছে। অনেক জায়গায় যুক্ত হয়েছে একাধিক রুট। সেই তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে কলকাতা। তবে যেভাবে পরিকল্পনা করে এগোচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ তাতে ভোল পালটে যাবে তিলোত্তমার। তারাতলা-জোকা, শিয়ালদহ-সেক্টর ফাইভ লাইন চালু হয়েছে সম্প্রতি। আগামীতে হাওড়ার সঙ্গে যুক্ত হবে মেট্রো। কবি সুভাষ থেকে বিমানবন্দরে যাওয়া যাবে বাইপাসের উপর নির্মিত মেট্রো লাইন ধরেই।
এদিকে নোয়াপাড়া থেকে বারাসত লাইন নিয়েও তোড়জোড় শুরু করেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, খুব শিগগিরই মেট্রো চেপেই যাওয়া যাবে এয়ারপোর্ট বা কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। ইয়েলো লাইনের বিমানবন্দর স্টেশন নোয়াপাড়া-বারাসাত হয়ে বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্প করিডোরের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হতে চলেছে।
স্বাভাবিকভাবেই ভারত ও বিদেশ থেকে আসা যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে এসে ‘সিটি অফ জয়’-এর যে কোনও প্রান্তে সহজে পৌঁছে যেতে পারবেন।
কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, কলকাতাবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বিমানবন্দর থেকে ৫-৭ মিনিটের মধ্যে খুব কম খরচে শহরের প্রাণকেন্দ্রে পৌঁছানো, আর তাই নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর মেট্রোর প্রসারিত অংশের কাজ পুরোদমে চলছে।
জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে মেট্রো চারটি স্টেশন তৈরি হবে ৬.২৫-কিমি রাস্তায়। এর মধ্যে বিমানবন্দর স্টেশনই হবে একমাত্র ভূগর্ভস্থ স্টেশন।
মেট্রো রেলের মুখ্য-জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, এখান থেকে বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু হওয়ার দুই বছরের মধ্যে বিমানবন্দর স্টেশনে প্রতিদিন ১ লক্ষ লোক যাতায়াত করবে। এই স্টেশনে অত্যাধুনিক যাত্রী সুবিধা প্রদান করা হবে। যাত্রীদের সুবিধার্থে থাকবে ৬টি করে এসকেলেটর, লিফট এবং সিঁড়ি থাকবে। এছাড়াও এখানে দুটি সাবওয়ে থাকবে। যার একটি যশোর রোডের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। ৪টি প্রবেশ/প্রস্থান পয়েন্ট-সহ এই সাবওয়েতে ৩টি জরুরি সিঁড়িও থাকবে। আর একটি সাবওয়ে থাকবে যা বিমানবন্দর স্টেশনকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
রেলের তরফে বলা হচ্ছে, তাদের অনুমান ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রায় ৪৬ হাজার যাত্রী প্রতিদিন যশোর রোড স্টেশন ব্যবহার করবেন। নাগেরবাজার, কৈখালী মোড় এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কোয়ার্টার কমপ্লেক্স এলাকায় বসবাসকারী লোকেরা এই স্টেশনটি ব্যবহার করে শহরের যে কোনও অংশে যেতে পারবেন সহজেই। যাত্রীদের সুবিধার জন্য এই স্টেশনে ৪টি এসকেলেটর, ২টি লিফট থাকবে। এগুলি ছাড়াও প্ল্যাটফর্মগুলিকে সাবওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য ৪টি সিঁড়িও থাকবে।