উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন: রাজ্য-রাজনীতিতে সিভিকদের দিয়ে প্রাথমিকে শিক্ষাদান নিয়ে যখন সরগরম। ঠিক তখনই নীরবে সুন্দরবনের এক পুলিশ আধিকারিক তাঁর অমূল্য সময় বাঁচিয়ে শিক্ষা দান করে চলেছেন। বাঁকুড়ায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রাথমিক স্তরে পড়ানোর বিজ্ঞাপন নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে গেল গেল রব উঠেছিল। আর সে সময়ই শিক্ষকের ভূমিকায় দেখা গেল সুন্দরবনের এক আধিকারিককে। যিনি চক দিয়ে বোর্ডে বানান লেখা শেখাচ্ছেন।
সাধারণত পুলিশ দেখলেই এড়িয়ে চলে সাধারণ মানুষ। কিন্তু পুলিশও এখন নানা সামাজিক কার্যকলাপে নিজেদের যুক্ত করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে চলেছে। রক্তদান শিবির, চক্ষু পরীক্ষা শিবির, স্বাস্থ্য শিবির, ফুটবল প্রতিযোগিতা সহ নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সামাজিক দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছে পুলিশ। এবার সেই কাজে স্কুলে গিয়ে ছোটদের পড়াতে দেখা গেল সুন্দরবনের ক্যানিংয়ের বর্তমান আইসিকে। সুযোগ পেলেই ক্যানিং এর নিকারিঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে হাজির হন ক্যানিং থানার আইসি সৌগত ঘোষ। সেখানে শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান।
ক্যানিং থানা এলাকার এই শিক্ষাকেন্দ্রের অভাবি শিশুদের নানাভাবে সাহায্যও করেন তিনি। সম্প্রতি তাঁকে চক-ডাস্টার নিয়ে পড়াতে দেখা গেল। মূলত স্কুলছুট রুখতে ও পুলিশ সম্পর্কে ভয় কাটাতেই তাঁর এই উদ্যোগ বলে জানা গেল।
পুলিশ আধিকারিকের এই ভূমিকার অনেকেই প্রশংসা করেছেন। অনেকের পুলিশ সম্পর্কে ধারণাও বদলেছে। কেউ কেউ আবার বলছেন, সমাজের কল্যাণের জন্য অন্য পুলিশ আধিকারিকেরাও এভাবে এগিয়ে এলে অনেক সমস্যার সহজেই সমাধান হত। এমনকী সমাজের আমূল পরিবর্তনও হতে পারত। সুন্দরবনের অভাবি গরিন পড়ুয়াদের পাশে শিক্ষা দান করতে এই ভাবে পুলিশের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এগিয়ে আসুক। তাহলেই সুন্দরবনে গরিবপড়ুয়া সমাজে সঠিক শিক্ষা নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে। আর ক্যানিংয়ের আইসির এহেন কাজ সত্যিই প্রশংসাযোগ্য।