পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: তামিল সাহিত্যিক পেরুমল মুরুগানের লেখনি ঝলসে উঠেছে দেশের জাতপাত প্রথার বিরুদ্ধে। বর্ণাশ্রমের নামে বজ্জাতির বিরুদ্ধে, হিংসার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন তার কথাসাহিত্যে। তার উপন্যাস ‘পায়ার’ ২০২৩ সালের বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছে দীর্ঘ তালিকায়। গত বছর বুকার পুরস্কার পেয়েছিলেন হিন্দি সাহিত্যিক গীতাঞ্জলি শ্রী। দেশভাগের যন্ত্রণা ফুটে উঠেছিল তার লেখায়।
এবার জাতিভেদ প্রথার নৃশংসতা, ঘৃণা, হিংসা নিয়ে লেখা তামিল ভাষার উপন্যাস ‘পুক্কুলি’ বুকারের লংলিস্টে জায়গা পেয়েছে। ফের কি বুকার আসতে চলেছে ভারতে, শুরু হয়েছে প্রতীক্ষা। এই উপন্যাসে বলা হয়েছে এক আন্তঃধর্মীয় দম্পতির কথা। তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে সমাজের অনুশাসন এড়াতে। কিন্তু তারপরও তাদেরকে অনার কিলিং বা সম্মানরক্ষায় হত্যার মুখোমুখি হতে হয়। পেরুমলের কথায়, এই অনার কিলিং দেশের জ্বলন্ত সমস্যা। চিতার মতো জ্বলছে দেশ জাতপাতের ভেদে। স্বাধীনতার ৭৫ বছরেও সেই চিতার আগুন নেভেনি। বর্তমান বিজেপি সরকার তাতে ঘৃতাহুতি দিয়েছে। ২০১৫ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মুরুগান।
তার উপন্যাস ‘মাদোরুভাগান’কে কেন্দ্র করে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের রোষের শিকার হয়েছিলেন তিনি। এ হেন মুরুগানকে বুকার তালিকায় দেখে অনেকেই বলছেন, একজন প্রকৃত লেখক তিনি। বুকার পেলে সেটা যোগ্য হাতেই যাবে।
প্রসঙ্গত, মোট ১৩টি বই এবার লংলিস্টে ঠাঁই পেয়েছে বলে বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশনের তরফে জানানো হয়েছে। এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার নানা দেশের লেখকদের বইয়ের মধ্যে রয়েছে মুরুগানের উপন্যাসটিও। ২০১৬ সালে লেখা তামিলে লেখা ‘পুক্কুলি’ উপন্যাসটি তরজমা করেছিলেন অনিরুদ্ধান বাসুদেবান। মুরুগানই প্রথম তামিল লেখক, যার বই পুরস্কারের জন্য লংলিস্টেড হল। এর আগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত বেশ কয়েকজন সাহিত্যিক জিতেছেন এই পুরস্কার। ভিএস নাইপল, ঝুম্পা লাহিড়ী, অরুন্ধতী রায়দের সাহিত্যকীর্তি আন্তর্জাতিক মহলে সমাদৃত হয়েছে।