পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কর্নাটকের নন্দিহালি গ্রামে দলিতদের বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগে মামলা দায়ের হল। হাভেরি থানার পুলিশ দলিতদের দুটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার রাতে দুটি দলিত পরিবারের ১২ জন সদস্য যখন ঘুমোচ্ছিলেন তখন তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে অনুমান, তাদের জীবিত পুড়িয়ে মারার অভিপ্রায় ছিল।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, একদল গ্রামবাসী যাদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দায়ের করেছে, তারা দলিত কলোনিতে এসে তাদের বাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল, কাঠ ছুঁড়তে থাকে। সেগুলিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা চেয়েছিল আগুন যাতে পাশের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়া দেখতে পেয়ে বাড়ির লোকেরা কোনও মতে নিজেদের প্রাণ বাঁচান। প্রাণ ভয়ে তারা নিজেদের বাড়ি ছেড়ে পাশের গ্রামে নিজেদের আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বিষয়টি নজরে এসেছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বাসবরাজ বোমানির। ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
হাভেরি থানাই উর্ধতন আধিকারিক জানিয়েছেন, রনেবেনুর থানায় মামলা হয়েছে। এই ঘটনায় আগেই দুজন পুলিশের কাছে আত্ম সমর্পণ করেছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার জানান, যে বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ‘মামলাগুলি তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের অধীনে দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনায় আরও তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, আমরা আশা রাখি এই ঘটনায় খুব শীঘ্রই অভিযক্তুরা আত্ম সমর্পণ করবে, না হলে তাদের গ্রেফতার করা হবে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যায় দেবী দায়ভামাভভা নিয়ে একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রা যাচ্ছিল। যখন সেই শোভাযাত্রাটি দলিত কলোনির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল তখন বেশ কয়েকজন শিশু ও যুবক বাজনার তালে তালে নৃত্য করতে থাকেন। এই ঘটনায় গ্রামের বেশ কিছু মানুষ প্রতিবাদ জানান। তাদের বক্তব্য এই মেলার জন্য তারা অর্থ জমিয়ে এই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, কোনও ভাবেই সেখানে দলিতরা অংশগ্রহণ করতে পারে না। সেই সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু রাতে দলিত পরিবারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিবেশীরা ছুটে আসতেই অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়, কোনও রকমে প্রাণে রক্ষা পায় দলিত পরিবারগুলি।