পুবের কলম প্রতিবেদক: সাংসদ তহবিলের টাকায় কমিউনিটি হল তৈরির কাজে গতি আনুন। জেলাশাসকদের এমনটাই নির্দেশ দিলেন মুখ্য সচিব বলে নবান্ন সূত্রে খবর। একাধিক জেলায় এখনও পর্যন্ত জমি চিহ্নিতকরণের কাজ হয়নি। জমি চিহ্নিতকরণের কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করতে হবে। শুধু তাই নয় কাজ শুরুও দ্রুত করতে হবে। এই মর্মে জেলাশাসকদের ফের নির্দেশ দিলেন মুখ্য সচিব।
সম্প্রতি নবান্নের তরফে জেলাগুলিকে কমিউনিটি হল তৈরি নিয়ে বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়। দেখা যায় বরাদ্দ অনুমোদন থাকলেও এখনও পর্যন্ত কমিউনিটি হল তৈরির কাজ এগোয়নি। সেই বিষয় নিয়েই এবার আরও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ শুরু করতে বললেন মুখ্য সচিব বলেই নবান্ন সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, আগামী বছর লোকসভা ভোট। সংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকায় রাজ্যের ২২ জেলাতে ৬১২ টি কমিউনিটি হল নির্মাণে সাংসদদের সুপারিশ সহ ১৯ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে।নির্মাণ দূর অস্ত প্রস্তাবিত অর্ধেকেরও বেশি কমিউনিটি হল তৈরির জমি চিহ্নিতকরণের কাজই শুরু হয়নি। বহু জেলায় জমি চিহ্নিত করার পরও নানা অজুহাতে টেন্ডার প্রক্রিয়াই শুরু করেনি।
নবান্ন দ্রুত জেলাশাসকদের সংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকায় কমিউনিটি হলের জন্য জমি চিহ্নিতকরণের কাজ দ্রুত শেষ করে নির্মাণ শুরু করার নির্দেশ দিল।
জেলাগুলিতে কমিউনিটি হল তৈরির জন্য সংসদদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সংসদদের প্রস্তাব মতোই এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকায় এই হল নির্মাণ করা হবে।একমাত্র দার্জিলিঙের সাংসদ রাজ্য সরকারের এই প্রস্তাবকে মান্যতা দেয়নি। বাকি সব জেলাতেই শাসক ও বিরোধী সাংসদরা এই কর্মসূচিতে সম্মতি জানায়। কিন্তু প্রশাসনিক উদাসীনতায় একটা নির্মাণও শুরু করা যায়নি।
নবান্ন সূত্রের খবর, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন এই প্রকল্পের হাত ধরে সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে সুপারিশ মত এক কোটি আট লক্ষ ও এক কোটি টাকা পেয়েছে। একটি কমিউনিটি হলের জমিও চিহ্নিত করাই হয়নি।
প্রসঙ্গত, পূর্ব মেদিনীপুরের দুই সাংসদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারী ও ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী। তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ থাকলেও শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে মানসিকভাবে অবস্থান করছে রাজনীতিতে। সেজন্যই কি পূর্ব মেদিনীপুরে সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলে কাজ নিয়ে গড়িমসি।পশ্চিম মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ঘাটালের তৃণমূল সংসদ দেব সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এলাকায় শাসক দলের মধ্যে কোন্দল রয়েছে।
যদিও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন নবান্নকে জানিয়েছে, কমিউনিটি হল নির্মাণের জন্য সাংসদ দের অনুমোদন পত্র পাওয়া যায়নি। সেজন্যই প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না। আবার বীরভূমে ২ কোটি চার লক্ষ টাকায় ৩১ টি কমিউনিটি হল তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। জমি চিহ্নিত হয়েছে। মাত্র ১৭ হল নির্মাণের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরে ১ কোটি ৮ লক্ষ টাকায় ২৪ টি কমিউনিটি হল নির্মাণে জন্য জমি চিহ্নিত করার পরও টেন্ডার ডাকার কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। এই জেলার একজন সাংসদ আসন।
বিজেপির জেলা সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ওই কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত। উত্তর দিনাজপুরও ৯টি কমিউনিটি হলের জন্য ১ কোটি ৮ লক্ষ টাকা পেয়েও টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি। আবার মুর্শিদাবাদ পেয়েছে ৬০ লক্ষ টাকা। ৫ টি কমিউনিটি হল নির্মাণের কথা। পূর্ব বর্ধমান ১ কোটি ৮ লক্ষ টাকা পেয়েও জমি চিহ্নিতকরণের কাজ শেষ করে উঠতে পারেনি।