পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: জোড়া ভূমিকম্প থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষ ও সর্বহারাদের জন্য ঘর-বাড়ি নির্মাণ শুরু করার ঘোষণা করেছে তুরস্ক। এরই মধ্যে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অঞ্চলগুলি চিহ্নিত করে নতুন বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এরদোগান সরকার। দেশটি জানিয়েছে, প্রথম ধাপে ৩০ হাজার বাড়ি নির্মাণ করা হবে। তুরস্কের পরিবেশ, নগরায়ণ এবং জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী মুরাত কুরুম শুক্রবার ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্র্নিমাণ প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়ে বলেন, নির্মাণ কাজ মার্চের মধ্যে শুরু হবে। কুরুম বলেন, ‘নতুন নির্মাণের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। তুর্কি প্রদেশগুলোতে ভূমিকম্পের ফলে প্রায় ৪০ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে। কয়েক হাজার ভবন ভেঙে পড়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
তিনি বলেন, নতুন ভবনগুলো তিন থেকে চার তলার বেশি হবে না এবং পরিকল্পনা করা হবে স্থানীয় সংস্কৃতি,ঐতিহ্য ও রীতিনীতি অনুযায়ী। কুরুম আরও বলেন, চলতি শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে হওয়া ক্ষতির মূল্যায়ন করছে তুরস্ক। প্রায় ৭,৩২৮ জন বিশেষজ্ঞ ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ে নিয়োজিত রয়েছেন। এ পর্যন্ত তারা ৬ লক্ষ ৮৪ হাজার বিল্ডিংয়ের প্রায় ৩০ লক্ষ ফ্ল্যাট পরিদর্শন করেছেন। তুর্কি মন্ত্রী বলেন, ৯০,৬০৯টি বিল্ডিংয়ের মধ্যে থাকা প্রায় ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার ফ্ল্যাট হয় সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অথবা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা জরুরিভাবে ভেঙে ফেলা প্রয়োজন। তুর্কি কর্মকর্তারা বলছেন, বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ১ কোটি ৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে, ভূমিকম্পের ১৩ দিন পরও দক্ষিণ তুরস্ক এবং উত্তর সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রাণের সন্ধান মিলছে। দুই দেশ মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার অতিক্রম করেছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, শুক্রবার পর্যন্ত তুরস্কে নিহত হয়েছে ৩৯ হাজার ৬৭২ জন। আর সিরিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজারেরও বেশি মানুষের। তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে জানিয়েছেন, প্রায় ২০০ স্থানে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জীবিতদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ অপসারণে অভিযান শুরু হয়েছে। যদিও এখনও কতজন মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে, জীবিত বা মৃত হতে পারে সে সম্পর্কে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি। উল্লেখ্য, গত ৬ই ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তুরস্কের কাহরামানমারাস প্রদেশ। দেশটির মোট ১০টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।