নোবেলজয়ী অধ্যাপক অমর্ত্য সেনকে বারবার হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। শান্তিনিকেতনে তাঁর পৈত্রিক জমি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে চাইছে একটি মহল। এই প্রেক্ষিতে বিশেষ সাক্ষাৎকারে অমর্ত্য সেনের মুখোমুখি হয়েছেন পুবের কলম প্রতিবেদক দেবশ্রী মজুমদার।
আপনি অনেকবার সত্যভাষণ করেছেন। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে বলেছেন। আপনার ‘তর্কপ্রিয় ভারতীয়’ বইতে সে নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। সেই কারণেই কি আপনি বার বার বিভিন্নভাবে টার্গেটের শিকার?
অমর্ত্য সেন: আমি অনেকবারই সত্যভাষণ করেছি। সেগুলো হয়তো কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গেছে। আমার বই ‘তর্কপ্রিয় ভারতীয়’তে এই বিষয়ে লিখেছি।
বিশ্বভারতীর উপাচার্য ধারাবাহিক ভাবে আপনাকে টার্গেট করছেন। আপনার মতো বিশ্ববরেণ্য মানুষকে অপমান, অসম্মানজনক কথা লিখছে। আবার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদি। তিনিও নিরুত্তর। আপনি কি মনে করেন, মোদির হাত উপাচার্যর মাথায় আছে, না হলে তিনি নিশ্চুপ কেন?
অমর্ত্য সেনঃ প্রশ্নটা আপনি করতে পারেন। প্রশ্নটা ঠিক। তবে উত্তরটা বলা সম্ভব নয়। তবে এটা ভাববার বিষয়।
আপনি জায়গা মাপার কথা বলছেন না। বলছেন, এটা আউট অফ কনটেক্সট। এ ব্যাপারে একটু যদি বলেন।
অমর্ত্য সেন: এটা আমার উকিল বলতে পারবেন। আমি পারবো না।
উনি বলছেন জায়গার পরিমাণ বাড়বে না। একই থাকবে।
অমর্ত্য সেন ঠিকই, জায়গার পরিমাণ তেরো ডেসিমেল থাকবে। প্রশ্নটা জায়গা মাপজোকের না। আমি বাল্যকাল থেকে এই জায়গা ষোলো আনা অর্থাৎ এক দশমিক আটত্রিশ ডেসিমেলের ভোগ দখলে আছি।
এই কেন্দ্র সরকারের বিকল্প সরকার গঠনে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে যোগ্য প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে আপনি মন্তব্য করেছেন। এ নিয়ে কী বলবেন?
অমর্ত্য সেন: মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমি একমত। তাঁর চিন্তার মধ্যে খোরাক আছে।
মুখ্যমন্ত্রী আপনাকে জমির নথিপত্র দিয়ে গেলেন…
অমর্ত্য সেন: মুখ্যমন্ত্রী পাশে দাঁড়ানোয় আমি স্বভাবতই খুশি। এই জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং আমার আইনজীবীর সঙ্গে আমি একমত।
কেন্দ্রে বিজেপি সরকার নিয়ে কী বলবেন?
অমর্ত্য সেন: দিল্লিতে সরকার চলছে। রাজনৈতিক, সামাজিক কাজ চলছে। তা যে মঙ্গলময়, সেটা বলার বুকের পাটা আমার নেই। দিল্লির শাসন দেশের পক্ষে কল্যাণ বয়ে আনেনি।
আপনার পাশে মুখ্যমন্ত্রী দাঁড়ানোয় তাঁকেও কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন উপাচার্য…
অমর্ত্য সেন: কেউ যদি আমাকে গালাগাল দেয়, সেটা ভালো লাগার কথা নয়। সেটাতে অনেকের খারাপ লাগতে পারে। আমাকে যাতে কুকথা না বলে সেজন্য আমি আইনি চিঠি পাঠিয়েছি। আমার এখানেই জন্ম। বাইরের কেউ এসে বলবে তুমি জায়গা ফেরত দাও, এসব হতে পারে না।