পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে নজিরবিহীন নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এসএসসি গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় ওএমআর শিট বিকৃত করে নিয়োগ পাওয়া ২৮১৯ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ।এদিন উক্ত সিঙ্গেল বেঞ্চে ওএমআর শিট বিকৃত করে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে মামলার শুনানি চলে। এদিন এজলাসে মামলার শুনানি পর্বে বিচারপতি মোট নিয়োগের সংখ্যা জানতে চান। এর প্রতুত্তরে এসএসসি জানায়, -‘৬৮৯৯ জনকে গ্রুপ ডি-তে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল’।এরপর সুপারিশ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয় সিঙ্গেল বেঞ্চের তরফে । ২৮১৯ জনের প্রসঙ্গ উঠে আসে শুনানি পর্বে। এরপরেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, -‘এঁদের চাকরি বাতিল করতে হবে’।এর পাশাপাশি এই ২৮১৯ জনের নাম, বাবার নাম, ঠিকানা-সহ পূর্ণাঙ্গ তালিকা আজ অর্থাৎ শুক্রবারের মধ্যে এসএসসির ওয়েবসাইটে আপলোড করে দিতে হবে বলে আদেশ জারি করা হয়েছে । এর আগে এসএলএসটি নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষেত্রেও একইভাবে চুরি করে চাকরি পাওয়াদের নাম, বাবার নাম, ঠিকানা-সহ তালিকা ওয়েবসাইটে দিতে বলেছিল হাইকোর্ট। হাইকোর্ট জানিয়েছে , -‘ এই তথ্যগুলি জনসমক্ষে জানানো না হলে একই নামের অনেকে থাকতে পারেন। তাঁদের মধ্যে যাঁরা নির্দোষ তাঁদের সামাজিক সম্মান যাবে। তাই স্পষ্ট হওয়া দরকার বিষয়টি প্রকাশ্যে না এলে’। গ্রুপ ডি-র নিয়োগ প্যানেলের ওয়েটিং লিস্টে থাকা অনেকের ওএমআর শিট বিকৃত করা হয়েছে।মোট ২ হাজার ৮১৯ জনের চাকরির সুপারিশ বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ, -‘ যারা কারচুপি করেছে তাদের প্রত্যেকের চাকরির সুপারিশ বাতিল করতে হবে। এদের তালিকা আবার নতুন করে আপলোড করতে হবে। নোটিস দিতে হবে। সেই সঙ্গে ৬ হাজার ৯৮৮ জন চাকরিপ্রার্থী, যারা অপেক্ষারত রয়েছেন, তাঁদের তালিকা থেকে ওই শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। অপেক্ষমান তালিকায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কারও ওএমআর শিটে যদি পরবর্তী সময়ে বিকৃতি পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ‘।,উল্লেখ্য, এই গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় ওএমআর শিট কারচুপি সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। ইতিপূর্বে সিবিআইয়ের তরফে হাইকোর্টে জানানো হয়েছিল ওএমআর শিট কারচুপির কথা। সিবিআই এর আধিকারিকরা উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে ওএমআর শিটগুলি উদ্ধার করেছেন। সিবিআই যে ওএমআর শিটগুলি দিয়েছে, সেই সবগুলি পরীক্ষা করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। এদিন এসএসসির তরফে আদালতে জানানো হয়, প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ওএমআর শিটের মধ্যে ২ হাজার ৮১৯টি ওএমআর শিটে গরমিল হয়েছে বলে দেখা গিয়েছে। এই কথা শুনে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন এসএসসিকে বলেন, ‘যদি আপনারা পরীক্ষা করে দেখতে পান কোনও কারচুপি করা হয়েছে, তাহলে পদক্ষেপ করতেই হবে’।যেহেতু এসএসসি কেবল নিয়োগের সুপারিশ করে, তাই আজ অর্থাৎ শুক্রবার দুপুর ১২ টার মধ্যে সেই চাকরির সুপারিশ বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মধ্য শিক্ষা পর্ষদকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে সেই নিয়োগ বাতিল করা হয়। আদালত সুত্রে প্রকাশ, স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে আদালতকে আজ অর্থাৎ শুক্রবার দুপুরের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, -‘ সিবিআই এর সাথে কোন কোন ওএমআর শিটগুলিকে মিল পাওয়া গিয়েছে’।