পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্য জুড়ে শুরু চলছে হাম এবং রুবেলার টিকাকরণ। শিশুস্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে টিকাকরণ করাচ্ছে রাজ্যসরকার। কিন্তু তারপরেও টিকা নিতে অনীহা রয়েছে নাগরিকদের একাংশের। এর নেপথ্যে রয়েছে স্পষ্ট ব্যাখ্যার অভাব। সেকথা মাথায় রেখে এবার রুবেলা টিকাকরণ নিয়ে প্রচারে জোর দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। কোনওররকম অনীহা না রেখে যাতে সকল শিশুকে টিকাকরণ করানো হয়, সেকথাই বোঝানো হবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে।
শুক্রবার নাগরিকদের উদ্দেশ্যে রুবেলা টিকার গুণাবলী ব্যাখ্যা করেন পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। একইসঙ্গে শহরের একাংশের যে রুবেলা টিকা নিয়ে অনীহা রয়েছে, সেকথা স্বীকার করে নেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, আগে এই টিকা বেসরকারি জায়গায় দেওয়া হতো। সেখানে অনেক টাকা লাগতো। ফলে নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুরা এই টিকাকরণের আওতা থেকে বাদ পরে যেত। বর্তমানে অনেকেই ভাবছেন সরকারি ক্ষেত্রেও হয়তো টাকা লাগবে, তাই অনেকেই পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই টিকাকরণ করাচ্ছে। এই বার্তাই সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে।’ প্রত্যেকেই যাতে তাঁদের শিশুকে টিকাকরণ করান, তার জন্য এদিন নাগরিকদের অনুরোধ জানান ফিরহাদ হাকিম।
কলকাতায় ১৪৪ টা ওয়ার্ডের মধ্যে টিকা প্রাপকের সংখ্যা ২ কোটি ৩৩ লক্ষ। শহরে সরকারি, পুর এবং বেসরকারি মিলিয়ে ২ হাজার ৪৮৮টি স্কুলে টিকাকরণ চলছে। এই কর্মসূচী চলবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত।
স্বাস্থ্যভবনের তরফে জানা গিয়েছে টিকা প্রাপকের সংখ্যা বাড়লে, সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে টিকাদানের সময় বাড়ানো হতে পারে। তবে টিকাকরণের ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভাকে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে পুর সূত্রে খবর।
জানা গিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত টিকাকর্মীর অভাব। একমাসব্যাপী এই কর্মসূচি চালাতে অতিরিক্ত ২৫০ টিকাকর্মীর প্রয়োজন। পুরসভার হাতে অতিরিক্ত টিকাকর্মী নেই। এদিকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী একমাস বাড়ি বাড়ি টিকা সংক্রান্ত প্রচার চালাবে পুরসভা। এই কাজ করানো হবে আশাকর্মী এবং একশোদিনের কর্মীদের দিয়ে।
সেক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি ঘুরে লিফলেট বিলি করবেন তাঁরা। এক্ষেত্রে একটা বড় সমস্যা রয়েছে। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এক লক্ষ লিফলেট দেবে। আরও চার লক্ষ লিফলেট পুরসভাকে ছাপাতে হবে। এছাড়াও একটি করে ব্যানার দেওয়া হবে প্রতিটি স্কুলে। বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে কাগজে এবং টিভিতেও। এই ব্যাপারে পুরসভার অর্থসঙ্কটের বিষয়টিও বৈঠকে উঠেছে।