পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ অবসর নিচ্ছেন। তার পরিবর্তে নতুন শিক্ষক-শিক্ষিকার দেখা মিলছে না আর। বিগত ৯ বছর ধরে এভাবেই চলছে সরকারি স্কুল। এই স্কুলে সংখ্যা ৩৯টি হলেও সিংহভাগ স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। আর এর জেরে ঘন্টার পর ঘন্টা অফ থাকছে স্কুলের ক্লাস।
হিন্দু স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক অভিভাবকের কথায়, ভালো স্কুল ভেবে ভর্তি করেছি। কিন্তু এখন বেশিরভাগ ক্লাসই ‘অফ’ যাচ্ছে। ফাঁকা ক্লাসে ছেলেরা হই হট্টোগোল করছে। স্কুলের ক্লাস যে নিয়মিত হচ্ছে না, সেটা পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেই জানা গেল।
একই সঙ্গে পড়ুয়াদের বক্তব্য, শিক্ষক না থাকলে কীভাবে ক্লাস হবে। আর ক্লাস না হলে কী ভাবে চুপ করে বসে থাক যায়। হিন্দু স্কুলের এক আধিকারিক বলেন, স্কুলে শিক্ষক নেই। শিক্ষকের অভাবে প্রতিদিন বহু ক্লাস অফ রা’তে হয়। এতে স্কুলের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। দিনের পর দিন শিক্ষক না থাকার ফলে অভিভাবকদের অনেকেই কোনও বেসরকারি স্কুলে চলে যাচ্ছে। এতে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা দিনের দিন কম হচ্ছে।
হেয়ার স্কুলের অবস্থা একই। সেখানে বহু শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন।
সরকারি স্কুলের শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্বে রয়েছে পিএসসি। সরকারি স্কুলের শিক্ষক শূন্যপদ পিএসসিকে পাঠায় স্কুল শিক্ষা দফতর। কিন্তু শিক্ষা দফতরকে একাধিকবার জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না বলে সরকারি স্কুলের অনেক শিক্ষকরাই অভিযোগ করেন। এ দিনে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের অনেকের আশঙ্কা, শিক্ষক না পেলে স্কুলেরগুলি ছাত্র শূন্য হবে। আর ছাত্র শূন্য হলে একটি স্কুল বন্ধের মুখে পড়বে।
এদিকে উত্তরবঙ্গের রাজগঞ্জ স্কুলে টানা ৫ মাস ধরে নেই শিক্ষক, ফলে শিক্ষক না থাকায় লাটে উঠেছে স্কুলের পঠনপাঠন। ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিত স্কুলে আসে, শিক্ষকের আশায় আশায় সারাদিন কাটিয়ে আবার বাড়ি ফিরে যায়। ছাত্র সংখ্যা ৪৫ হলেও গত মার্চ মাস থেকে কোন শিক্ষক নেই। তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা শিক্ষা দফতর।
ক্লাস নেওয়ার কথা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। অথচ পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিচ্ছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। প্রায় ২০০ জন পড়ুয়ার ক্লাস নেওয়ার দায়িত্ব মাত্র দুজন শিক্ষকের কাঁধে। তাঁরাও আবার অনুপস্থিত। এই মাদারিহাট গভর্নমেন্ট মডেল হাইস্কুলে। সরকারি স্কুলে এভাবে পাঠদান চলায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।