পুবের কলম প্রতিবেদক: জেলায় জেলায় খোদ অভিযোগকারীর কাছেই এবার পৌঁছে যাবে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। তবে, শুধুমাত্র অভিযোগকারীর ‘দুয়ারে’ পৌঁছে যাওয়ার বিষয়টি নয়।
জেলা স্তরে থাকা বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল, নার্সিংহোম, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উপর নজরদারির বিষয়টি আরও জোরদারও করতে চাইছে স্বাস্থ্য কমিশন। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য কমিশনের একটি টোল ফ্রি নম্বর চালু করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
বুধবার, ২৫ জানুয়ারি সাংবাদিক বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য কমিশন অর্থাৎ, ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারপার্সন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে, অভিযোগকারীকে আমাদের কাছে আসতে হবে না, আমরা যাব অভিযোগকারীর কাছে।’ কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এই বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারপার্সন এমনই জানিয়েছেন, অনেক সময় দেখা যায়, অভিযোগকারীকে অনেক কষ্ট করতে হয়। কারণ, অভিযোগ জানানো থেকে শুরু করে শুনানির বিষয়টি, এই ক্ষেত্রে কলকাতা থেকে অনেক দূরের কোনও জেলার কোনও অভিযোগকারীকে যদি কলকাতায় স্বাস্থ্য কমিশনের অফিসে আসতে হয়, তা হলে তাঁর সময় এবং খরচের বিষয়টিও রয়েছে।
কোভিড-১৯-এর কারণে ভার্চুয়াল মোডের শুনানি এক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করেছে। তবে, এমনও দেখা গিয়েছে, ভার্চুয়াল মোডের শুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য টেকনোলজির বিষয়টি সম্পর্কে কোনও কোনও অভিযোগকারী সেভাবে সড়গড় নন। এই ধরনের বিভিন্ন অবস্থায় ভাবা হয়, স্বাস্থ্য কমিশন কেন অভিযোগকারীর কাছে পৌঁছে যেতে পারে না।
স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারপার্সন এদিন জানিয়েছেন, এর আগেও জেলায় জেলায় গিয়েছে এই কমিশন। সামগ্রিক বিষয়টি খতিয়ে দেখে একটি রেগুলেশন তৈরির জন্য সরকারকে প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যসাথীর বিষয়ে অভিযোগ আগের তুলনায় এখন অনেক কমে গিয়েছে। তবে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসাথীর বিষয়টি নয়। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারপার্সন এ দিন এমনই জানিয়েছেন, বিভিন্ন জেলায় বেসরকারি যে সব হাসপাতাল, নার্সিংহোম, ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে, সেই গুলির উপর নজরদারি আরও জোরদার করা হচ্ছে। এর জন্য মালদহ জেলা থেকে শুরু করা হচ্ছে কমিশনের কাজ। মালদহের চাঁচলে আগামী সাত এবং আট ফেব্রুয়ারি মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুর জেলার জন্য থাকবে কমিশন। এর পরে পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জন্য পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে থাকবে কমিশন।
স্বাস্থ্য কমিশনের সম্পর্কে এখনও অনেক মানুষ জানেন না। ফলে, সকল মানুষের কাছে যাতে পৌঁছতে পারে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন, সেই প্রচেষ্টাও জারি রয়েছে। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারপার্সন এ দিন বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমিশনের ২৪x৭ টোল ফ্রি নম্বর চালুর জন্য প্রচেষ্টা চলছে।’ তিনি জানিয়েছেন, এই নম্বরে ফোন করে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ জানানো যাবে। প্রয়োজনে প্রতি মাসে জেলা স্তরে স্বাস্থ্য কমিশন পৌঁছে যাবে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারপার্সন।