কৌশিক সালুই ,বীরভূম:- গরু পাচারের কালো টাকা লেনদেনের হদিস পেতে ফের বীরভূমে সিবিআই। বুধবার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের জিজ্ঞাসাবাদদের পাশাপাশি আরো একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের সিউড়ি শাখায় তদন্তের জন্য হাজির সিবিআই আধিকারিকেরা।এদিন সিবিআই আধিকারিকেরা প্রথমে বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকে আসেন। সেখান থেকে সিউড়ি দুই ব্লকের ধোবা গ্রাম এবং হরিপুরে যান। ফের তাড়া সিউড়ি শহরের রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের একটি শাখায় এবং শেষ বেলায় পুনরায় কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের যান সিবিআই আধিকারিকরা। ধোবা গ্রামে গিয়ে প্রায় ১৭ থেকে ১৮ জন এবং হরিপুরে ৭ থেকে ৮ জন সমবায় ব্যাংকের ওই সন্দেহজনক সঙ্গে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। তাদের কাছে জানতে চান সিউড়ির ব্যাংকে কোনো একাউন্ট আছে কিনা। তাদের জমি নিয়েও খোঁজ করেন সিবিআই আধিকারিকরা। যেহেতু সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তরফ থেকে জানানো হয়েছিল কৃষকদের ধান কেনার টাকা সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকা লেনদেন হয়েছে মাত্র আর অন্য কিছু নয়। যদিও ওই অ্যাকাউন্ট হোল্ডাররা জানিয়েছেন তাদের জানা নেই সিউড়ির কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের শাখায় নিজেদের কোনো অ্যাকাউন্ট আছে কিনা। প্রসঙ্গত গত ৫ জানুয়ারি গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক সুশান্ত ভট্টাচার্য, স্বরূপ দে সহ আরো এক আধিকারিক বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের সিউড়ি শাখায় প্রায় তিন ঘন্টা ধরে তদন্ত করেন। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছিল প্রায় ১৭৭ টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হদিস পাওয়া গিয়েছে। যেখানে বহু টাকা লেনদেন হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান গরু পাচারের কালো টাকা সাদা করা হয়েছে, ওই সমস্ত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। ওই মামলায় প্রায় চার মাসের বেশি সময় ধরে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন।
বিশেষ সূত্রে গিয়েছে আমোদপুর, সাঁইথিয়া, বোলপুর সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের রাইস মিলের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট একাউন্টগুলিতে টাকা লেনদেন করা হয়েছে। ওই সমস্ত অ্যাকাউন্টগুলি ২০২০ এবং২০২১ সাল জুড়ে হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়ে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সেটা হল একই হাতের লেখায় সমস্ত স্বাক্ষর করা হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলি কৃষকদের ধান বিক্রির টাকার লেনদেনের জন্য খোলা হয়েছিল এবং সেখানেই গরু পাচারের কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ব্যাংকের বর্তমান ম্যানেজার অভিজিৎ সামন্ত এবং বিগত বছরের আগস্ট মাসে সিউড়ির ব্যাংক ম্যানেজার থেকে কিন্নাহার শাখায় ট্রান্সফার হয়ে যাওয়া ইন্দ্র বাহাদুর গুরুং সেই দিন সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন। হরিপুর ও ধোবা গ্রামের বাসিন্দা মল্লিকা সাহা, বুলু মন্ডল, বেচারাম মন্ডলরা বলেন,” আমাদের বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকে কোন একাউন্ট নেই। আমরা জানি না কিভাবে ওখানে আমাদের নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। আজকে সেই বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছে সিবিআই এর আধিকারিকরা”।