পারিজাত মোল্লাঃ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে উঠে হুক্কা বার সংক্রান্ত মামলা। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে কলকাতা এবং বিধাননগর এলাকায় কোনও হুক্কা বার বন্ধ করা যাবে না।
হাইকোর্ট জানিয়েছে, যেহেতু এ নিয়ে রাজ্যের কোনও আইন নেই, তাই মহানগর এবং উপনগরী এলাকায় হুক্কা বার চলতে পারে। কারণ কেন্দ্রীয় আইনেই সেই সুবিধা দেওয়া আছে। এর পরও যদি হুক্কা বার বন্ধ করতে হয়, তবে রাজ্য বা পুরসভাকে নতুন আইন প্রণয়ন করে তা বন্ধ করতে হবে। তার আগে পর্যন্ত হুক্কা বারগুলির বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না। গত ডিসেম্বর মাসের শুরুতে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, শহরের সব রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষকে হুক্কা বার বন্ধ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এরপরে বিধাননগর পুরসভাও এই একই সিদ্ধান্ত নেয়।
এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি মান্থার প্রশ্ন তুলেছেন সেই নির্দেশ নিয়েই। শুনানিতে বিচারপতি জানান, কলকাতা এবং বিধাননগর পুরসভা তাদের প্রশাসনিক এলাকায় হুক্কা বার বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা আইন মেনে নেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে পুরসভা কর্তৃপক্ষের অধিকার নিয়ে বিচারপতির আরও প্রশ্ন,কেন মেয়র এমন সিদ্ধান্ত নিলেন? এখান থেকে তো প্রচুর রেভিনিউ আসে। হুক্কায় অন্য দ্রব্য মেশানো হচ্ছে কি না, পুলিশ তা অনুসন্ধান করতে পারে। হুক্কায় হার্বাল প্রোডাক্ট ব্যবহার হলে অসুবিধা কোথায়?
উল্লেখ্য, কলকাতা এবং বিধাননগর পুরসভার এই নির্দেশের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছিলেন হুক্কা বার কর্তৃপক্ষ। দাখিল মামলায় যুক্তি ছিল হুক্কা বার মালিকদের, ২০০৩ সালে সেন্ট্রাল টোব্যাকো আইন মেনে এই বারগুলি চালানো হয়।
এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের অনেক রায় রয়েছে। সেই রায় অগ্রাহ্য করে পুরসভা কী ভাবে হুক্কা বার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারে? হুক্কা বারগুলির মালিকদের দাবি ছিল,তাঁদের হুক্কায় ভেষজ তামাক ব্যবহার করা হচ্ছে?।
অপরদিকে, মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, হুক্কা বারগুলিতে হুক্কার সঙ্গে এমন কিছু রাসায়নিক দেওয়া হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই ভবিষ্যতে শহরকে হুক্কা বার মুক্ত করতে চাইছে পুরসভ। তবে কলকাতা হাইকোর্ট এও জানিয়েছে, ওই সব হুক্কা বারে আইনের বাইরে কোনও কিছু হয়ে থাকলে পদক্ষেপ করতে পারবে পুলিশ। না হলে নয়।
যদি থাকে, তবে বন্ধ করুন। না হলে আইন তৈরি করে প্রয়োগ করুন। তার আগে আপনারা এ ভাবে বন্ধ করতে পারেন না। কেন্দ্রীয় সরকারের আইন মেনেই হুক্কা বার চলতে পারে।