ইনামুল হক, বসিরহাট: শিক্ষিকার বদলির নির্দেশ আসায় যেতে দিতে নারাজ, চোখের জলে ভাসল ছাত্র-ছাত্রীরা। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে হাড়োয়া ব্লকের মল্লিকপুর খেজের আলী স্মৃতি অবৈতনিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। শিক্ষিকা কাকুলি মন্ডল গত এক বছর আগে এই স্কুলের শিক্ষকতা করতে হাওড়া জেলা চেঙ্গাইল থেকে এখানে এসেছেন। এক বছরের মধ্যে স্কুলের আড়াইশো ছাত্র-ছাত্রী সহ অভিভাবকদের মন জয় করে নিয়েছেন। একদিকে তাদের সামাজিক শিক্ষা, অন্যদিকে পুঁথিগত শিক্ষা দিয়ে স্কুলের সুন্দর পরিবেশ তৈরি করেছেন।
স্কুলের ২৫০জন ছাত্র-ছাত্রী, ৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকা সহ অভিভাবকরা ওই শিক্ষিকার বদলি নির্দেশ আসার খবর জানতেই তাদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। শুক্রবার স্কুল ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় ছাত্র-ছাত্রীরা চোখের জলে সটান তার পায়ে ধরল শিক্ষিকাকে। যেতে দিতে নারাজ। তারা চাইছে শিক্ষিকা পড়াশোনার মধ্য মায়ের মত স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে তাদের সুবিধা অসুবিধা সবটুকু দেখেন। গত এক বছরের স্কুলের শিক্ষার মান অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাই তার যেতে দিতে নারাজ।
এই ঘটনায় রীতিমতো আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে অভিভাবক অভিভাবকরাও চাইছেন সন্তানদের দাবি মেনে এই শিক্ষিকা যদি থাকেন তাহলে খুবই ভালো হয়। কিন্তু সরকারি নির্দেশ তাকে যেতেই হবে।
প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন পুরো বিষয়টা জানার পর শিক্ষিকাকে যাতে বদলি না করা হয় তার জন্য অতিরিক্ত স্কুল পরিদর্শক আধিকারিক এর কাছে লিখিত জানিয়েছেন। শিক্ষিকা কাকলি মন্ডল চোখ ছলচল অবস্থায় বলেছেন, আমার এই স্কুল ছেড়ে যেতে কষ্ট তো হচ্ছে বটেই।
ছোট্ট শিশুদের কাতর আবেদনকে অস্বীকার করা যায় না। তবে সরকারি নির্দেশিকাকেও অমান্য করা যায় না। সংশ্লিষ্ট দফতর যা চাইবেন সেটাই আমাকে মান্যতা দিতে হবে।
এই ঘটনায় ছাত্রছাত্রী অভিভাবকদের চোখের জল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে এক অন্য মৈত্রী তৈরি করল বলে মনে করছে শিক্ষানুরাগীরা।