সফিকুল ইসলাম (দুলাল)বর্ধমান: বয়স যে কোনও বাধা হয়ে দাঁড়ায় না তা প্রমাণ করে দিল মুন্সি আজিজুর রহমান। ১১০ বছর বয়স হওয়া সত্বেও আজও দৈনিক তিনি ‘পুবের কলম’ পত্রিকা পড়ে চলেছেন। একবেলা খেতে না পেলেও কোনও ক্ষতি নেই, কিন্তু দৈনিক পুবের কলম তাকে পড়তেই হবে। মুন্সি আজিজুর রহমানের সাত পুত্র ও এক কন্যা। তাদের মধ্যে বড় পুত্র, এক কন্যা এবং এক নাতি ইতিমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন। পেশায় প্রাইমারী শিক্ষক ছিলেন। বহুদিন হল কাজ থেকে অবসর নিয়েছেন।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের সঙ্গে সঙ্গে সকালে কলম না পড়লে তাঁর চলে না। নাতনির সন্তানদের বিবাহ হয়েছে। তাদেরও আবার সন্তান-সন্তনি আছে। অসংখ্য পুত্র কন্যা, নাতি-পুতি ও তাদের নাতি-নাতনি এক বিরল দৃষ্টান্তের অধিকারী মুন্সী আজিজুর রহমান।
দীর্ঘদিন ধরে বর্ধমান টিকরহাট প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন সম্মানের সঙ্গে। এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা রহমানিয়া ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সম্পাদক হাজি কুতুবুদ্দিন বলেন, ‘আজিজুর সাহেব এলাকার হিন্দু-মুসলমান সকলের কাছে খুবই জনপ্রিয়। তাঁর এক পুত্র মাওলানা মফিজ মাদ্রাসা দারুল উলুম সেহারাবাজারের বিশিষ্ট শিক্ষক ও আলেম। অন্য এক পুত্র সরকারি স্কুলের শিক্ষক। বাড়ির বেশিরভাগ মানুষ সৎ সজ্জন ও ধার্মিক। ভোটার কার্ডে আজিজুর সাহেবের বয়স লেখা আছে ১০৪ বছর। বাড়ির লোকেদের অভিমত ১১০ বছরের বেশি বয়স হয়েছে উনার। বড় সন্তান জীবিত থাকলে তার ৮২ বছর এর উপর বয়স হত।
খন্ডঘোষের বিধায়ক নবীন বাগ বলেন, ‘আজিজুর সাহেবের কাছে শেখার আছে কিভাবে তিনি এতদিন সুস্থ আছেন।’ অন্যদিকে, খন্ডঘোষের বিডিও সত্যজিৎ কুমার তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং তাঁর আরও দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন। এই প্রবীণ নাগরিকের যে-কোনও প্রয়োজনে পাশে থাকবেন বলে জানালেন তিনি।
এককথায়, পুবের কলম-এর হয়ে কলম ধরেছেন অনেকেই, কিন্তু বাস্তবে এমন একনিষ্ঠ পাঠক সত্যিই বড় বিরল। বেঁচে থাকুক কলম, পড়ে বাঁচুন আজিজুর রহমান।