পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দুর্গাপুজোর বিসর্জনের দিন উত্তরবঙ্গের মাল নদীতে হড়পা বান বিপর্যয়ে নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়ে মানবতার নজির গড়েছিলেন মহম্মদ মানিক। একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে ডেকে মানিককে সাবাশি দিয়েছিলেন তিনি। ফের খবরের শিরোনামে সেই মহম্মদ মানিকের নাম।
এবারেও প্রশংসার পাওয়ার মতোই কাজ করলেন তিনি। এবার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরের তালিকায় যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম থাকা সত্ত্বেও সেই ঘর গরিব মানুষদের উদ্দেশ্যে ফিরিয়ে দিলেন তিনি। গরিব পরিবারের ছেলে মহম্মদ মানিকের বাড়ি টালিরের চালের, দেওয়াল ইট গাঁথা। কিন্তু সেই তালিকায় যোগ্য প্রার্থী হিসেবে নাম থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ঘর ফিরিয়ে দিলেন গরীব মানুষের জন্য। মানিকের এই ঘটনায় সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বিডিও’ শুভজিৎ দাশগুপ্ত।
মাল বাজারের ঘটনার পর থেকেই সাধারণ লোকের মুখে জনপ্রিয় নাম মহম্মদ মানিক। এলাকাতেও তিনি পরোপকারি ছেলে হিসেবেই পরিচিত।
গতবছরের ৫ অক্টোবর ছিল দশমী। সেই দিন রাতে যখন মাল নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের কাজ চলছে, তখন আচমকা হড়পা ভেসে যান অনেকেই। মৃত্যু হয়েছিল আটজনের। আহত হন ১৩ জন। ঠিক তখনই নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে জলে ঝাঁপিয়েছিলেন সেই মহম্মদ মানিক। মানিকের জন্যই সেই বেঁচে ফেরেন অনেকেই। কয়েকজনকে টেনে নদীর পাড়ে নিয়ে এসেছিলেন। তাঁর এই অনন্য কাজে সবাই অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।
স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মালবাজার শহরে গিয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন। সেই মানিকই ফের নিজের কাজের জন্য সকলের প্রশংসা কুড়িয়ে নিলেন। নিজে মাল পঞ্চায়েত সমিতি দফতরে এসে বিডিও কাছে লিখিত ভাবে জানিয়ে যান তাঁর নামে বরাদ্দকৃত ঘর তিনি নিচ্ছেন না।
মহম্মদ মানিক জানিয়েছেন, আমার তো থাকার মতো ঘর আছে। এই মুহূর্তে আমার ঘরের দরকার নেই, তাই ফিরিয়ে দিচ্ছি’।
মালের বিডিও শুভজিৎ দাশগুপ্ত জানান, মহম্মদ মানিকের এই মানসিকতা প্রশংসার যোগ্য। এই কাজকে আমরা সাধুবাদ জানিয়েছি। খুবই ভালো কাজ করেছেন এই যুবক।
রাজ্য রাজনীতিতে যখন আবাস যোজনা দুর্নীতি নিয়ে একে অপরকে কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে, ঠিক তখনই মহম্মদ মানিকের এই কাজ সকলের কাছে প্রশংসার দাবি রাখে।