পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: বিশ্বে করোনা ভয় ধরালেও বাংলায় আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি নয়। তাই নবান্নে বুধবার জরুরি বৈঠকের পর মুখ্যসচিব জানিয়ে দিলেন এখনই করোনা নিয়ে কোনো কঠোর বিধি নিষেধ আরোপের কথা ভাবছে না নবান্ন। তবে সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে, রয়েছে নাগরিক সচেতনতারও প্রয়োজন।
তাই স্বাস্থ্যভবনকেও যেমন তৈরি থাকতে হবে, একইভাবে নাগরিককেও ব্যক্তিগত সুরক্ষার কথা ভাবতে হবে। এদিন বৈঠক শেষে সেই বার্তাই দিলেন। প্রসঙ্গত গত কাল রাজ্যজুড়ে ৪৫ টি হাসপাতাল করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি হিসাবে মকড্রিল অনুষ্ঠিত হওয়ার পর হাসপাতালগুলির বাস্তবিক অবস্থা পর্যালোচনায় এদিন ছিল পর্যালোচনা বৈঠক। এই বৈঠকে ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা। সেখানে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে প্রশাসনকে আরও সতর্ক হওয়ার বার্তা দিলেন মুখ্য সচিব।
নবান্নের এই বৈঠক থেকে এদিন কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে হঠাৎ করে সংক্রমণ বাড়লে তা মোকাবিলার জন্য প্রথম ধাপে ৩৭১৮ টি কোভিডবেড তৈরি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য সচিব। একইসঙ্গে বিভিন্ন জেলায় করোনা আক্রান্তদের উপর নজর রাখার কথাও বলেছেন তিনি। প্রয়োজনে যত বেশি সংখ্যক রোগীর জিনোম সিকোয়েন্সিং করা যায় তার প্রয়াস চালানোর কথা বলা হয়েছে এই বৈঠকে।
এদিন এই বৈঠক থেকে টিকাকরণ ও বুষ্টার ডোজ নিয়ে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। যেহেতু আকস্মিক ভাবে চীনে করোনার বাড়বাড়ন্তের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বুস্টার ডোজ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। কিন্তু সমস্যা হল এই মুহূর্তে রাজ্যের হাতে চাহিদার তুলনায় বুস্টার ডোজ রয়েছে খুব নগণ্য পরিমাণে। আর সে কারণেই এদিন মুখ্য সচিব জানিয়েছেন রাজ্যে যে বুস্টার ডোজের অভাব রয়েছে সে কথা জানানো হবে কেন্দ্রকে।
যেহেতু রাজ্য চাইলেই সরাসরি টিকা মানুষকে দিতে পারে না তাই এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর ভরসা করে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই রাজ্য সরকারের হাতে। আর সে কারণেই কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হচ্ছেন তারা। একইসঙ্গে দিনের বৈঠকে টেস্টিং অর্থাৎ পরীক্ষার সংখ্যা আরো বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। প্রয়োজনে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে টেস্টিং কিট নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য সচিব।
মুখ্য সচিব নির্দেশ দিয়েছেন শুধু টেস্টিং কিট নয় করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত সমস্ত ধরনের কিট মজুদ রাখতে হবে অক্সিজেনের বিকল্প হিসাবে হাসপাতালগুলিতে বাড়তি অক্সিজেন তৈরি রাখতে হবে। বিশেষ করে যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তাদের বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। যেহেতু রাজ্যে করোনা সংক্রমনের পেছনে অনেকটাই ভিন্ন ভিন্ন দেশ থেকে আসা মানুষ দায়ী তাই ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গুলিতে বাড়তি নিরাপত্তা এবং টেস্টিং এর উপর জোর দিতে বলা হয়েছে।