পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কোভিড নীতিতে বিশ্বাসী চিনে লকডাউন তুলে দেওয়ার পরেই করোনার ঢেউ সুনামির আকারে উপচে পড়েছে।চিনে শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যু, হাসপাতালে শয্যার অভাব বিশ্বের অন্যান্য মানুষকেও আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলছে। বিগত দু বছর আগে চিনের এই উহানে জন্ম নিয়েছিল করোনা মহামারি। তার পরে বিশ্বের প্রায় সব দেশগুলি করোনার এই ভয়াবহ রূপকে প্রত্যক্ষ করেছে।
ফলে ২০২২ এর করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ হানার খবরে নড়েচড়ে বসেছে ভারত। বিগত দিকে করোনা মোকাবিলায় ভারত বিশ্বের কাছে প্রশংসা কুড়িয়েছে। ভ্যাকসিনেও সাফল্য কুড়িয়েছে দেশ। তবে করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭-কে কোনওভাবে হেলাফেলা করতে রাজি নয় দেশ। প্রস্তুত থাকার জন্য দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রককে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি দেশবাসীকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এই আবহে ওমিক্রনের এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের ঢেউ উঠলে কিভাবে সামাল দেওয়া হবে তা দেখতেই এবার দেশব্যাপী চালু হল মক ড্রিল। বিভিন্ন হাসপাতালে করোনায় এমার্জেন্সি পরিস্থিতি সামাল দিতে মক ড্রিল মহড়া চলছে। বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে মঙ্গলবার সেই মক ড্রিল মহড়া খতিয়ে দেখলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। এদিন দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাণ্ডব্য। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যদি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় তার জন্য সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মক ড্রিল করার উদ্দেশ্য দেশের মানুষ যেন সঠিক চিকিৎসা পায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করোনা প্রতিরোধে আমাদের সতর্ক থাকতে বলেছেন’।
প্রসঙ্গত, করোনা আতঙ্ক ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতেই কেন্দ্রের তরফ থেকে রাজ্যগুলি ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের হাসপাতালগুলিতে মক ড্রিল করার নির্দেশ দিয়েছে। দিল্লির পাশাপাশি বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ সহ অন্যান্য শহরগুলির হাসপাতালেও মক ড্রিল শুরু হয়েছে। মক ড্রিলের মাধ্যমে হাসপাতালগুলিতে করোনা চিকিৎসার কী ব্যবস্থা রয়েছে, হাসপাতালে কত করোনা বেড আছে তা দেখা। মক ড্রিলের মাধ্যমে একসঙ্গে কত রোগীকে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা সম্ভব, হাসপাতালে কত জন করোনা আক্রান্তকে অক্সিজেন দেওয়া যাবে তা খতিয়ে দেখা। তা ছাড়াও অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর, বাইপ্যাপের কী ব্যবস্থা আছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এছাড়াও করোনার চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত এমন কর্মী, গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের জোগান, করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ও পরিকাঠামো, অ্যাম্বুলেন্সের (লাইফ-সাপোর্ট থাকা অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যাও) প্রাপ্যতার মতো বিষয় খতিয়ে দেখে নেওয়া হবে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে। ফের সংক্রমণ বাড়লেও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর যাতে চাপ না পড়ে সেই পরিকাঠামো শক্ত করতেই কেন্দ্রের এই ব্যবস্থা। সোমবার জারি করা কেন্দ্রীয় সরকারের একটি পরামর্শের মাধ্যমে এই মহড়া শুরু হয়েছে। দিল্লিতে এর তত্ত্বাবধান করবেন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া।
দিল্লির লোক নায়েক জয় প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতাল সহ বেসরকারি ও দক্ষিণ দিল্লির সরিতা বিহারের অ্যাপোলো হাসপাতালে এই মক ড্রিল করা হবে। এলএনজেপি মেডিকেল ডিরেক্টর ডক্টর সুরেশ কুমার সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, আমরা ড্রিলের জন্য প্রস্তুত রয়েছি যা করোনা সম্পর্কিত যে কোনও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতির মূল্যায়ন করবে। সেইসঙ্গে মহামারি চলাকালীন যেমনটি করা হয়েছিল, বিছানা, অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং ভেন্টিলেটরের প্রাপ্যতার রিয়েল-টাইম ডেটা জনসাধারণের জন্য দিল্লি সরকারের একটি পোর্টাল থেকে পাওয়া যাবে। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী একটি জুম মিটিং করে অক্সিজেন সিলিন্ডার, পালস অক্সিমিটার এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের জন্য একটি মক ড্রিল করার পরামর্শ দিয়েছেন।