পুবের কলম প্রতিবেদক: আর দিন দশেক পরেই ইংরেজি নববর্ষ। এই নতুন বর্ষে বাংলার মানুষদের জন্য নয়া উপহার দিতে চলেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলার প্রতিটি জেলায় ৭৫টি করে মডেল রেশন দোকান খোলার উদ্যোগ নিয়েছে মোদি সরকার। দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে দেশজুড়ে চলছে ‘অমৃত মহোৎসব’। তারই অঙ্গ হিসেবে দেশের প্রতিটি রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ৭৫টি করে মডেল রেশন দোকান তৈরির পরিকল্পনা করেছে মোদি সরকার।
এই দোকানগুলিতে রেশন গ্রাহকদের জন্য একগুচ্ছ বিশেষ সুবিধা থাকবে। তার জন্য রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ৭৫টি করে রেশন দোকানকে চিহ্নিতকরণ ও তার পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য খাদ্য দফতরকে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে।
দেশজুড়ে রেশন ব্যবস্থার সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য ঋণ পেতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক বা এডিবি’র আলোচনা চলছে। এডিবি ঋণ পাওয়া গেলেই ওই সব রেশন দোকানের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য কিছু টাকা দেবে কেন্দ্র সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা মতো দেশের প্রতিটি জেলায় ৭৫টি করে মডেল রেশন দোকান খোলা হবে। ওই সব রেশন দোকানে উন্নত গ্রাহক পরিষেবা, উন্নত খাদ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং স্বচ্ছতা ও নজরদারির বন্দোবস্ত থাকবে। দোকানে রাখতে হবে ফার্স্ট-এইড বক্স, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, সিসি ক্যামেরা গ্রাহকদের জন্য আচ্ছাদনযুক্ত বসার জায়গা, পানীয় জলের ব্যবস্থা এবং ডিসপ্লে বোর্ড।
ওই সব রেশন দোকানে আবশ্যিক ভাবে রাখতে হবে ইলেকট্রনিক ওজন যন্ত্র এবং তা ই-পস মেশিনের সঙ্গে সেটিকে যুক্ত করে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে রাখতে হবে আইরিশ স্ক্যানার যা দিয়ে চোখের মণির ছবির মাধ্যমে গ্রাহকের আধার নম্বর যাচাই করতে হবে। এর পাশাপাশি মডেল রেশন দোকানে ডিজিটাল পেমেন্ট ও অনলাইনে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবার সুবিধা যাতে গ্রাহকেরা পান সেদিকটিও লক্ষ্য রাখতে হবে।
জানা গিয়েছে, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির খাদ্যদফতরের সঙ্গে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রকের সাম্প্রতিক বৈঠকে এই মডেল রেশন দোকান চালুর বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।
প্রতি জেলায় মডেল রেশন দোকান চিহ্নিতকরণ ও পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য রাজ্যগুলিকেই উদ্যোগী হতে বলেছে কেন্দ্র।
তবে অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন, মডেল রেশন দোকানের জন্য তাঁরা যে কোনও খরচ করতে পারবেন না, তা সরকারকে বলে দেওয়া হয়েছে। আর এখানেই থাকছে প্রশ্ন, রেশন ডিলাররা যদি এই প্রকল্পে খরচ না করেন, কেন্দ্র সরকার যদি কোনও টাকা না দেয় তাহলে এই প্রকল্প কী রাজ্য সরকারকেই রূপায়িত করতে হবে। কেননা রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ৭৫টি করে এই মডেল রেশন দোকান চালু করতে খুব কম করেও ৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে। কেন্দ্রের প্রকল্পের জন্য সেই খরচ কেন রাজ্য সরকার বহণ করবে?
তবে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্র কোনও খরচা বহণ করবে কী করবে না তা সরাসরি কিছু বলেনি। সেক্ষেত্রে মডেল রেশন দোকানের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধের দায় রাজ্যের ওপরেই চাপবে। তাই রাজ্য সরকারও দ্রুত এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নিতে চাইছে না। তবে রেশন দোকান চিহ্নিতকরণ ও সেই দোকান পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মাণের কাজ এগিয়ে রাখতে চাইছে। নতুন বছরই সেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।