পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : অরুণাচলের তাওয়াংয়ে চিনা আগ্রাসনের আবহে অগ্নি-৫ এর সফল উৎক্ষেপণ করল ভারত। স্বভাবতই দেশের মাটিতে এই উৎক্ষেপণ একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। বিভিন্ন মিসাইলের পরোক্ষ হুমকি দিয়ে ভারতকে চাপে ফেলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে চিন। এই পরিস্থিতিকে অগ্নি-৫-এর উৎক্ষেপণ বেঞ্জিংয়ের দিকে ভারতের কড়া চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর অগ্নি-৫-এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হয়েছিল। আবার এ বছর ১৫ ডিসেম্বর ওড়িশা উপকূলে আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে অগ্নি-৫ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা সফল হল।
বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ভারত সফলভাবে অগ্নি-৫ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের রাত্রিকালীন পরীক্ষা চালিয়েছে। ৫৪০০ কিলোমিটারের বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত আনতে সক্ষম এই মিসাইল।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের নতুন প্রযুক্তি এবং সরঞ্জাম যাচাই করার জন্য পরীক্ষাটি করা হয়েছিল। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি এখন আগের চেয়ে আরও দূরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
ওড়িশার উপকূলের আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে খবর, এটি অগ্নি-৫-এর নবম ফ্লাইট। প্রথম পরীক্ষা হয় ২০১২ সালে। ভারতের অস্ত্রাগারে অগ্নির যে সিরিজ রয়েছে সেটার মধ্যে পাল্লার দিক থেকে দেখলে অগ্নি ১ মিসাইল ৭০০ কিমি দূরে আঘাত হানতে পারে। অগ্নি ২ যেতে পারে ২০০০ কিমি দূরে। অগ্নি ৩ ও অগ্নি ৪ মিসাইল অন্তত ৩৫০০ কিমি দূরে আঘাত হানতে সক্ষম।
প্রসঙ্গত, তাওয়াং সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে এদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছিল চিনা সেনা। দু দেশের সেনার মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। দুপক্ষের একাধিক সেনা এতে জখম হয়েছিলেন বলে খবর। তবে কারোর মৃত্যু হয়নি বলে জানা যায়। এই প্রসঙ্গে বিবৃতিও দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার মধ্যেই এবার অগ্নি ৫ এর পরীক্ষায় সফল হল ভারত।
এদিকে গত বছর ভারতের অগ্নি ৫ এর মহড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল চিন।
উল্লেখ্য, চিনা আগ্রাসনের কয়েকদিন আগেই এই ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ভারত একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করার কথা ঘোষণা করেছিল। এই প্রসঙ্গে অরুণাচলের তাওয়াং-এই ঘটনার আগে এয়ারম্যানদের জন্য একটি নোটাম বা নোটিশও জারি করা হয়।
অরুণাচলে অনুপ্রবেশের সঙ্গে চিন গত সপ্তাহে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নামে পরিচিত ডি ফ্যাক্টো সীমান্তে “একতরফাভাবে স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করার” চেষ্টা করেছিল। দুই পক্ষের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ থেকে আহতের ঘটনা ঘটে। তবে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, চিনা আগ্রাসন সফল ভাবে প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে।