কৌশিক সালুই বীরভূম: – বীরভূমের শুট আউট কাণ্ডে জোড়া খুনের ঘটনার কিনারা করতে বড়সড় সাফল্য পেলো পুলিশ। মূল অভিযুক্তের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে তিন দাগি দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার সিউড়ি আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশী হেফাজত মঞ্জুর করেন। এদিকে মূল অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলে দাবি পুলিশের।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে মুহম্মদ বাজার থানার হাবরা পাহাড়ি গ্রামে দুই ব্যক্তি খুনের ঘটনায় ধৃতরা হলেন কমল বাউড়ি বাড়ি দুবরাজপুর থানার বড় সালুঞ্চি গ্রামে, একই থানা এলাকার লক্ষ্মীনারায়নপুর গ্রামের কাজল বাউরি ওরফে চড়ক এবং লোকপুর থানা এলাকার পলাশবুনি গ্রামের অশোক বাউরি। এরা তিনজনই দাগি দুষ্কৃতি হিসেবে পরিচিত। এদের বিরুদ্ধে বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র কারবারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আরো জানা গিয়েছে ১৯৯৭ সালে কমল বাউড়ির বোমা বিস্ফোরনে দুই হাত উড়ে যায়, যদিও সে পরবর্তী সময়ে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা সরবরাহের কাজে নিয়মিত যুক্ত ছিল বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। গত সোমবার রাত্রে হাবরা পাহাড়ি গ্রামে খুনের ঘটনার পর ঘটমাস্থল থেকে পুলিশ একটি মোবাইল ফোন সাইকেল টর্চ এবং ডাইরি উদ্ধার করে। সেই মোবাইলের সূত্র ধরে জানা যায় ঝাড়খণ্ডের কোন বয়স্ক ব্যক্তির পরিচয় পত্র ব্যবহার করে সিম কার্ড তোলা হয়েছিল। সেই ফোনের কল লিস্ট ধরে ওই তিনজনের পরিচয় পাওয়া যায়। খুনের ঘটনার মূল দুষ্কৃতির সঙ্গে ওই তিনজনের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান খুনের ব্যবহৃত আগ্রস্তরটি ওই তিনজনের কাছ থেকেই নিয়েছিল মূল অভিযুক্ত। ঘটনার পরদিন গত মঙ্গলবার মহ: বাজার থানায় সাদি হাঁসদা অভিযোগ দায়ের করেন যে এক অচেনা ব্যক্তি তাদের বাড়িতে রাত্রি বাসের জন্য জেদাজেদি করছিল। সেই সময় সাদির পূর্ব পরিচিত ইয়াদ আলী এবং ভাই ধনা হাসদাকে ফোন করে ডাকে। ঘটনাস্থলে এসে ওই অচেনা ব্যক্তিকে তারা দুজন মিলে ক্লাব ঘরে নিয়ে যেতে চায়। বচসা ও ধস্তাধস্তি শুরু হয়। সেই সময়ই ওই ব্যক্তি বন্দুক বের করে দু রাউন্ড গুলি চালিয়ে দেয়। তাতেই দুইজনের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান ইয়াদ আলী এবং বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মারা যান শিক্ষক ধনা হাসদার। সিউড়ি আদালতের সহকারি সরকারি আইনজীবী মোক্তাব হোসেন বলেন,”খুনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হয়েছিল বিচারক ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন”।
বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন,”খুনের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনের কল লিস্ট ধরে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খুনের ঘটনায় যুক্ত মুল অভিযুক্তের সঙ্গে তাদের সরাসরি যোগসূত্র পাওয়া গেছে। খুব দ্রুত মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হবে”।