পুবের কলম প্রতিবেদক: রেশনে দুর্নীতি ঠেকাতে ক্রমশ কঠোর হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তাই কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে যেমন রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার যোগ সম্পন্ন হয়েছে তেমনি এবার গ্রাহকের পরিচিতি নিশ্চিত করতে চোখের মণির ছবিকে গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ রেশন গ্রাহকদের চোখের মণির সঙ্গে রাজ্য সরকারের কাছে থাকা চোখের মণির ছবি মিলে গেলেই রেশন পাবেন তাঁরা। না মিললে কিন্তু পাবেন না। এই নিয়মই এবার চালু হচ্ছে বাংলার বুকে। এর জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও পরিকাঠামো তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্যের খাদ্যদফতর। রেশন সংক্রান্ত দুর্নীতি রুখতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে।
বাংলা কিংবা দেশের অন্য কোনও রাজ্য রেশন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কোনও ঘটনা নয়। এক গ্রাহকের নামে বরাদ্দ রেশন অন্য কেউ তুলে নিচ্ছে বা মৃত গ্রাহকদের কার্ড চালু রেখে তা দিয়ে নিয়মিত রেশন তোলা কিংবা যাদের কোনও অস্তিত্বই নেই তাঁদের নামে কার্ড বানিয়ে নিয়মিত তা দিয়ে রেশন তোলার অভিযোগও ওঠে।
এবার তাই চোখের মণিকে হাতিয়ার করছে রাজ্য সরকার। কেননা খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, আধারের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তি হলেও সব সময় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বা আঙুলের ছাপ দিয়েই রেশন তুলতে হয়, এমনটা নয়।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, আঙুলের ছাপ মেলে না। আঙুলে কোনও দাগ থাকলে বা বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অনেক সময় আঙুলের ছাপ সহজে মেলে না। তার জন্য দু’টি বিকল্প ব্যবস্থা আছে।
এক, আধারের সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বরে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ওটিপি পাঠানো। আর দুই চোখের মণির ছবি মিলিয়ে দেখা।
খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, আধারের সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বরে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ওটিপি পরপর ৩ বার পাঠানোর পরও যদি লেনদেন সম্ভব না হয়, তাহলে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আধারের মাধ্যমে রেশন দেওয়া হয় গ্রাহককে।
এভাবে দুর্নীতির একটা রাস্তা খোলাই থাকে। কারণ, রেশন তুলতে গেলে আধার কার্ড না থাকলেও শুধু নম্বর হলেই কাজ চলে যায়। রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণের সময়েই বহু আধার নম্বর হস্তগত করেছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী।